বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন শহরের দুই ডাক্তার, পুলিশে অভিযোগ আইনজীবীদের

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল মিররঃ করোনা নিয়ে ফেসবুকে রীতিমত মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ উঠল শহরের দুই ডাক্তারের বিরুদ্ধে। তাঁরা ইচ্ছাকৃত ও একটি সম্প্রদায়কে আক্রমণের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। শিক্ষিত মানুষ কেন এমন করেছেন? তাছাড়া সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ তো সংবিধান বিরোধী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা পুলিশ কমিশনার ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে নালিশ করল আইনজীবীদের সংগঠন 'অল ইন্ডিয়া লইয়ারস ইউনিয়ন'।

তাঁদের দাবি, অবিলম্বে দুই ডাক্তারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ পদক্ষেপ নিতে হবে। বাতিল করতে হবে মেডিক্যাল রেজিস্ট্রেশন।
অভিযোগ, ইমেইল

জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ডাক্তারদের মধ্যে একজন মেডিকেল কলেজের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। দিল্লী নিজামউদ্দিনের তবলিগের জমায়েতকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত। দিল্লিতে তবলিগি জমায়েত থেকেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তেমনই খবর সম্প্রচারিত হয়। তবে তবলিগের জমায়েতকে ঢাল করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এমনই অভিযোগ। সেই বিতর্কে জড়ালেন এনআরএস কাণ্ডের মূল অান্দোলোনকারী ডাক্তার অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য।যদিও তিনি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দাবি করেছিলেন, তাঁরা পদবী দেখে চিকিৎসা করেন না। অর্থাৎ জাতপাত তাঁদের ধর্তব্যে নেই। কিন্তু নিজামুদ্দিন পরবর্তী সময়ে ফেসবুকে একের পর এক বিদ্বেষমূলক পোস্ট করার অভিযোগ উঠল অর্চিষ্মানের বিরুদ্ধেই।মুসলিম সম্প্রদায়কে খাটো করতে তিনি লাগাতার বিষোদগার করেছেন ফেসবুকে।
গত ৪ এপ্রিল বেলা দেড়টার সময় ডা. অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। তিনি লিখেছেন, "তিরুপতি থেকে ফেরা লােকজন তাে কই স্পিটিং ( থুথু দেওয়া ) করেছে না, অশালীন আচরণ করছে না..... ডিফারেন্সটা কোথায় বােঝা যাচ্ছে।" তাঁর এমন মন্তব্যে শােরগােল পড়ে যায় । ফেসবুকেই তার মন্তব্যের জন্য পক্ষে - বিপক্ষে নানান মতামত আসতে থাকে। তাতেও দমেননি অর্চিষ্মান ও তার দোসররা। উলটে নিজের সাম্প্রদায়িক চেহারা উন্মোচিত করেন অর্চিষ্মান। তিনি মুসলিমদের 'টেরােরিস্ট ' ও 'পােটেন্সিয়াল রেপিস্ট' বলেও কটুক্তি করেন।

শুধু অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য নয় তার পক্ষে জোরালো সওয়াল করতে আসেন আরেক ডাক্তার সুমন্ত ভট্টাচার্য। তিনি আবার মেডিক্যাল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। তার নিশানায় ছিল মুসলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। প্রসঙ্গত, ডাক্তারি পড়ার যোগ্যতা অর্জন অনন্য ভূমিকা রাখছে রাজ্যের মুসলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের সাফল্য ডাক্তারের গাত্রদাহের কারণ। তিনি ফেসবুকে মন্তব্য করেন, আজকাল কিছু মিশন গজিয়ে উঠছে। চুরি করে এন্ট্রান্স পাশ করে ডাক্তার তৈরি হলেও মানুষ হতে পারবে না মিশনের পডুয়ারা। এমনকি মিশন থেকে পাশ করা ছাত্ররা নাকি ডাক্তার বেরোলে রোগীদের গায়ে থুথু ছেটাবে। তা আবার তবলিগের থেকে শিখে।

বিতর্ক এখানেই থেমে থাকেনি। ডাক্তার অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য শুক্রবার ও শনিবারে ফেসবুকে একাধিক বিদ্বেষমূলক পোস্ট করেন। মুসলিমদের তিনি বিষধর সাপ বলে কটুক্তিসহ নানান ঘৃণা ছড়ান। একটি সাপের মাথায় টুপি পরিয়ে ছবি আপলোড করে মুসলিমদের নিশানা করেন শ্রীমান ডাক্তার। কিন্তু একজন ডাক্তার শিক্ষিত ব্যক্তি কেন এমন পোস্ট করছেন বা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ফেসবুকে শুধু অর্চিষ্মান না সুমন্তই নন, একাধিক ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। নিউটন নামের ওই ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কুরুচিকর কথা লিখেছেন। তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।

Post a Comment

1 Comments

  1. উনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছেন পদবি দেখেন না, জাত দেখাবো না এটা বলে আসেনি। শিক্ষিত হয়েও এরকম উনি ব্যাবহার করছেন সেটা উনার একধরনের রাজনীতি।

    ReplyDelete