সানাউল্লাহ আহমেদ, কালিয়াচক
মালদা জেলার কালিয়াচকের একমাত্র যাত্রীবাহী রেলস্টেশন খালতিপুর। সেই রেলওয়ে স্টেশন অবহেলা ও অযত্নের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ে কর্মস্থল, কলেজ বা চিকিৎসার কাজে যাতায়াত করেন। অথচ তাদের নিত্যযাত্রা আজ ভোগান্তির সমার্থক। দীর্ঘ জাতীয় সড়ক ১২ নম্বর (পুরনো এনএইচ-৩৪) ধরে ১৮ মাইল টোল ট্যাক্স পেরিয়ে ফারাক্কা ব্যারেজের যানজটে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থেকে যাত্রীরা প্রতিদিন একের পর এক ট্রেন মিস করছেন। জনদুর্ভোগ ক্রমেই চরমে পৌঁছেছে, অথচ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের তরফে কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। এমনই অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
![]() |
ছবি সংগ্রহ |
দেশজুড়ে যখন একাধিক রেলওয়ে স্টেশনকে ‘অমৃত ভারত প্রকল্প’-এর আওতায় এনে আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তখন খালতিপুর রেলওয়ে স্টেশনকে সেই তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে কেন? প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী। নূন্যতম উন্নয়ন বা আধুনিকীকরণের কাজও এখানে হচ্ছে না। স্টেশন প্রাঙ্গণে রেলওয়ে প্রটেকশন ফোর্স -এর উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে, ফলে নিরাপত্তার অভাব তীব্র। যাত্রীদের জন্য পানীয় জলের কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা নেই, নেই উপযুক্ত বাথরুম, নেই ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড বা অন্যান্য আধুনিক সুবিধাও। মাত্র দুই-তিনটি লোকাল ট্রেন ও এক-দু’টি এক্সপ্রেস ট্রেনই এখানে দাঁড়ায়, ফলে বিশাল জনবহুল এই অঞ্চলের মানুষ চরম অসুবিধার মুখোমুখি হচ্ছেন।
এই ভোগান্তিতে শুধু কালিয়াচক নয়, সুজাপুর, মোথাবাড়ি ও বৈষ্ণবনগর বিধানসভার সাধারণ মানুষও প্রতিদিন ক্ষুব্ধ ও হতাশ।
এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে, খালতিপুর স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রির নিয়ম নিয়েও একাধিক অনিয়ম চলছে। রেলের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী, কোনো স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টিকিট বিক্রি হলে সেই স্টেশনে ট্রেনের স্টপেজ দেওয়া যায়। কিন্তু দেখা গেছে, খালতিপুর স্টেশনে সেই নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়েও বেশি টিকিট বিক্রি হওয়া সত্ত্বেও কোনো নতুন ট্রেনের স্টপেজ বা উন্নয়নমূলক পরিবর্তন ঘটেনি। রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনো সদুত্তরও মেলেনি।
স্থানীয়দের দাবি, "অমৃত ভারত প্রকল্পে যখন ছোট ছোট স্টেশনও আধুনিকীকরণ পাচ্ছে, তখন কালিয়াচকের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনকে অবহেলা করা মানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে অন্যায় করা।” প্রসাশনের হস্তক্ষেপ জরুরি।
স্থানীয় সাংসদ ঈশা খান জানিয়েছেন, রাজ্য প্রশাসন এবং রেল দফতরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছি। কোনও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। রাজ্য সরকার সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ।
0 Comments