তালতলা: আলিয়ার সামনে থেকে ঝুপড়ি সরাতে পুলিশের অভিযান

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: স্থানীয় খ্রিস্টান গির্জা, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-অধ্যাপক বহু মানুষের দাবি মেনে মঙ্গলবার তালতলা এলাকায় ঝুপড়ি সরাতে অভিযানে নামল কলকাতা পুলিশ। রীতিমত বুলডোজার নিয়ে প্রায় ১৫-২০টি ঝুপড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের অবস্থিত প্রভু যিশুর গির্জা সংলগ্ন রাস্তার ধারে থাকা ঝুপড়ি সরিয়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালতলা ক্যাম্পাস মুসলিম ইনস্টিটিউট-এর সামনে থাকা বেশ কয়েকটি ঝুপড়ি ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। এপি ডিপার্টমেন্ট-ক্যালকাটা মাদ্রাসার সামনে থাকা ঝুপড়ি আজ বুধবার ভেঙে ফেলা হবে বলে স্থানীয়দের জানিয়েছে পুলিশ। 


এই কাজে কলকাতা পুলিশের ভূমিকায় খুশি আলিয়ার পড়ুয়ারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়া বলেন, আমাদের অসুবিধা হচ্ছিল। মেয়েরা ঠিকমতো যাতায়াত করতে পারত না। ঝুপড়ি ঘিরে অবৈধ আসামাজিক কারবার চলে। একইভাবে গির্জার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা খুশি। তালতলা থানা, পুলিশ কমিশনার, কলকাতা  পুরনিগমে বারবার চিঠি দিয়েছিল একাধিক সংগঠন। সবার বক্তব্য ছিল ঝুপড়ি সরাতে হবে। মানুষের যাতায়াতে সমস্যা, রাতে মহিলাদের চলাফেরায় নিরাপত্তাহীনতা পরিবেশ নোংরা করার অভিযোগ ছিল। আলিয়ার গেটে ছাগল বেঁধে রাখা, জামাকাপড় মেলে দেওয়া, রিকশা-ভ্যান দিয়ে রাস্তা আটকানোর মতো অসংখ অভিযোগ ছিল। প্রশাসন যাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই দাবি তুলেছিল মৌলানা আজাদ কলেজ, মুসলিম ইনস্টিটিউট, গির্জা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-এর সঙ্গে যুক্ত মানুষজন

অন্যদিক ঝুপড়িবাসীদের বক্তব্য, সোমবার পুলিশ এসে জানিয়েছিল যে সরে যেতে হবে, না হলে ভেঙে ফেলা হবে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন, বর্ষার দিনে কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না। মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ এসে সব ভাঙতে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের অবস্থিত প্রভু যিশুর গির্জার সামনে থাকা ঝুপড়িতে বসবাস করতেন আসমানি বিবি। তিনি বলেন, আমাদের থাকার জায়গা নেই। আমরা খোলা আকাশের নিচে কীভাবে থাকব বুঝতে পারছি না। তাদের ছেলেমেয়ে কেউ কেউ স্কুলে পড়াশোনা করে, তাদের কী হবে বুঝতে পারছে না। একই কথা বলছেন দুচোখে ঠিকমতো দেখতে না পাওয়া অসুস্থ শেখ নইম। 

দিন সন্ধ্যায় ঝুপড়ি ভাঙার খবরে ছুটে আসেন সিপিএম নেতা ফুয়াদ হালিম, মধুজা সেন প্রমুখ। এক প্রশ্নের জবাবে ফুয়াদ হালিম বলেন, সবাই জানে যে ঝুপড়ি বা বস্তি আইনত বৈধ হতে পারে না। কিন্তু সরকারকে বিকল্প বাসস্থানের বন্দোবস্ত রতে হবে। তার আগে ভেঙে ফেলা মেনে নেওয়া যায় না

Post a Comment

0 Comments