বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: দেশজুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী আনছে নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর আক্রমণের ঘটনা সামনে আসছে। এইসব ঘটনার কড়া সমালোচনা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এসআইআর-এর নামে কারও ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। দেশজুড়ে চলতে থাকা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর নিয়ে এবার কড়া সমালোচনা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
শুক্রবার সল্টলেকের আইবি ব্লকে তাঁরই নামাঙ্কিত অমর্ত্য সেন রিসার্চ সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে অমর্ত্য বলেন, "এসআইআর-এর নামে ভোট দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে কোনও আলোচনা চলতে পারে না।" তাঁর মতে, "কিছুটা ভালো করার অজুহাতে বড় রকম ক্ষতি করা উচিত নয়।" একইসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, "এটা মানতে হবে, দেশে বহু নাগরিকেরই ডকুমেন্ট নেই। তাই বলে তাঁদের ভোটার হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না।"
![]() |
ছবি নিজস্ব |
দেশজুড়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যেভাবে বাংলা ভাষায় কথা বললেই নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে বাংলার মানুষকে, সেই অসহিষ্ণুতা নিয়েও এদিন সরব হন অমর্ত্য। তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, "বাংলায় কথা বললে নাকি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমি ফরাসি জানি না। নাহলে হয়তো আমাকে ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেওয়া হত।" তবে এ নিয়ে যে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, তা গোপন করেননি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তাঁর বক্তব্য, "এটা আমাকে কিছুটা চিন্তিত করে তুলেছে।" এরপরই অমর্ত্য বলেন, "আমাকে বাংলাদেশে পাঠালে কোনও আপত্তি নেই। কারণ, ঢাকাতে আমার বাড়ি ছিল। সেখানেই পরিবারের শিকড় রয়েছে।"
এদিন প্রতীচী ট্রাস্টের উদ্যোগে 'ভারতের যুব সমাজ তাঁদের প্রাপ্য সামাজিক সুযোগ' শীর্ষক একটি আলোচনাচক্রে অংশ নেন অমর্ত্য। তাঁর দাদু অধ্যাপক ক্ষিতিমোহন সেনের লেখা 'ভারতে হিন্দু-মুসলমানের যুক্ত সাধনা' বইটির পুনর্মুদ্রণ প্রকাশিত হয় এদিন। সেখানে বাংলা ও বাঙালি ইস্যুতে পড়ুয়াদের প্রশ্নে অমর্ত্য সেনের উত্তর, "মানুষের যে কোনও জায়গায় যাওয়ার অধিকার আছে। সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে। বাঙালি, পাঞ্জাবি, তামিলনাড়ু, এসব করলে চলবে না। হিন্দু-মুসলমান বিভেদ তৈরি করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তার প্রতিবাদ হওয়া উচিত।"
0 Comments