বারুইপুর: 'বজরং' দলের হাতে আক্রান্ত করিমের পাশে নওসাদ-হাকিকুলরা

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: সম্প্রতি তথাকথিত হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণের শিকার হন টোটোচালক করিম মোল্লা। তার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিল এসডিপিআই, আইএসএফ, ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া, মুসলিম লিগ, আজাদ সমাজ পার্টির নেতৃত্ব। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উত্তর মুকুন্দপুরের গুরুতর আহত টোটোচালক করিম মোল্লার পরিবারের কাছে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব। করিমের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী, এসডিপিআই রাজ্য সভাপতি হাকিকুল ইসলাম, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সভাপতি শাহজাদ মোল্লা, সহ-সভাপতি শফিউদ্দিন লস্কর, আজাদ সমাজ পার্টির পশ্চিমবঙ্গ ইনচার্জ ইমতিয়াজ আহমেদ মোল্লা, ওয়েলফেয়ার পার্টির সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন আহমেদ, মুসলিম লীগের কলকাতা জেলা সভাপতি সহ আরও অনেকে।

এশারন মোল্লার সঙ্গে কথা বলছেন নওসাদ, ইমতিয়াজ, হাকিকুলরা। 

নেতারা করিমের মা এশারন মোল্লা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। পরিবার অভিযোগ জানায়, কাঁঠালবেড়িয়ায় ‘হনুমান গেট’ তৈরির জন্য বজরং দলের সমর্থকরা চুরি করা বালি-ইট ব্যবহার করছিল। এই চুরির প্রতিবাদ করায় তাদের ছেলে রহিম মোল্লা একাধিকবার হামলা ও হুমকির শিকার হন। এমনকি মুসলিমদের ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য জোরাজুরি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয়দের দাবি, ষড়যন্ত্রের কথা পুলিশ জানলেও নিরাপত্তা দেয়নি, আর শেষ পর্যন্ত করিম মোল্লাকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয়।

আক্রান্ত করিমের বয়স ২৭ বছর। গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যা সাতটার দিকে টোটো নিয়ে শংকরপুর থেকে হোেটর স্টেশনের পথে যাওয়ার সময় মাত্র ৩০০ মিটার দূরে বারুইপুর থানা এলাকায় পৌঁছতেই কাঁঠালবেড়িয়ার একদল দুষ্কৃতকারী তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। অভিযোগ, মূল হামলাকারীরা বজরং দলের সমর্থক। পুলিশে বারবার খবর দেওয়া সত্ত্বেও প্রথমে কোনও সাহায্য মেলেনি। পরে গ্রামবাসী ও আত্মীয়দের সহায়তায় এবং মগরাহাট থানার পুলিশ করিমকে গুরুতর অবস্থায় ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তার শরীর, মাথা ও গালে গভীর ক্ষত রয়েছে এবং তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। নেতারা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ প্রতিনিধিরা বারুইপুর এসপি অফিসে গিয়ে প্রায় আধঘণ্টা আলোচনা করেন এলাকার সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে। বৈঠক শেষে নেতারা জানান, এসপি ব্যক্তিগতভাবে দায়িত্ব নিয়ে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছেন এবং ঘটনাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বর্তমানে দুই থানার পুলিশ গ্রামে অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়ে টহল দিচ্ছে, তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি, মূল চক্রান্তকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

Post a Comment

0 Comments