আসিফ রেজা আনসারী
সব মানুষ একই বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছাবে তা হতে পারে না। ভিন্নস্বর থাকা শুভ-লক্ষণ। শুধু তাই নয়, এটি সাহিত্য ও সমাজে অত্যন্ত জরুরি বিষয়ও। বুধবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে বাংলা বিভাগের এক আলোচনাচক্রে এমনই অভিমত ব্যক্ত করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক আবদুল কাফি। এ দিন আলিয়ায় সেমিনারে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম, কলা অনুষদের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জি, বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবদুল রহিম গাজী, বরিষ্ঠ অধ্যাপক মীর রেজাউল করীম, রবীন্দ্রভারতীর অধ্যাপক দেবলীন শেঠ প্রমুখ। এছাড়াও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়াদের পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগের অধ্যাপকরাও শ্রোতা হিসাবে সভাঘরে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ্উপস্থিত বিশিষ্টরা |
স্বাগত ভাষণে অধ্যাপক আবদুল রহিম গাজী উল্লেখ করেন, বর্তমান সময়কে উনিশ শতকের তুলনায় দেখলে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। আসলে এভাবেই সময় পালটে যায়। অন্য প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দের কথা তুলে বহুত্ববাদ ও ভিন্নমত লালন করার কথা বলেন তিনি। এ দিনের সেমিনারের উদ্বোধক তথা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি মালেশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন, থেকেছেন নানান দায়িত্বে। তাঁর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আলিয়ার মানোন্নয়নে জোর দিচ্ছেন তিনি। উপাচার্য সমস্ত বিভাগকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যাতে অন্তত মাসে একটি করে সেমিনার করা যায়। সেইভাবে বাংলা বিভাগ এগিয়ে এসেছে, তারজন্য তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। আলিয়ার পঠনপাঠন, গবেষণা ও অন্যান্য কাজকর্ম দেশ ও দশের কাছে দৃষ্টান্ত হতে পারে, সেই প্রচেষ্টা চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আলিয়ার ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার, ঐতিহ্য ও আধুনিকজীবনের প্রয়োজনে জ্ঞান-বিজ্ঞাচর্চার ক্ষেত্রে আলিয়া আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে। দেশ তথা দুনিয়ার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে আলিয়া, সেই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপাচার্য। সাহিত্যের নানান দিক নিয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করেন অধ্যাপক শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যাপক আনিসুর রহমান, অধ্যাপক অঙ্কনা বেতাল।
মূলবক্তা অধ্যাপক আবদুল কাফি ভিন্নস্বরের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে বহুলপ্রচলিত ‘হোয়াটস্অ্যাপ ইউনিভার্সিটি’র বয়ান তৈরি ও সাহিত্যের ইতিহাস লেখনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গী ও স্মরণের প্রেক্ষিত আলোচনা করেন। তাঁর মতে, একজন ব্যক্তি যখন কিছু লেখেন, তখন তাঁর স্মরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে একটি বিষয়কে স্মরণ করছেন, সেই দৃষ্টিভঙ্গী আলাদা হয় বলেই ‘দেশভাগ’-এর মতো একই নিয়ে দুই ব্যক্তির সাহিত্য বা লেখনীতে ভিন্নতা থাকে। এমন নানান উদাহরণ তিনি তুলে ধরেন।
(সৌজন্যে– পুবের কলম)
0 Comments