হুমকি–ধুমকি দিয়ে বিশ্বশান্তিকে বিঘ্নিত করছে ইসরাইল-আমেরিকা: ইমাম-মুয়াজ্জিনসভায় বিশিষ্টরা

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতি, নেশা-মুক্ত সমাজ গঠন-সহ নানান বিষয়কে কেন্দ্র করে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ইমাম-মুয়াজ্জিনদের একটি সংগঠন। বৃহস্পতিবার এই সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন আয়োজক সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া ইমাম-মুয়াজ্জিন অ্যান্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’-এর রাজ্য সভাপতি মাওলানা শফিক কাসেমী, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আধুর রাজ্জাক, রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম-এর সম্পাদক আহমাদ হাসান ইমরান-সহ বহু বিশিষ্ট মানুষ। সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতে মাওলানা জিয়াউদ্দিন কাসেমী ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে সরব হন। ইরানের উপর ইসরাইল ও আমেরিকার আক্রমণ নিয়েও কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি ইরানের প্রতিরোধের প্রশংসা করেন। অন্য বক্তারাও অভিযোগ করেন, আমেরিকা ও ইসরাইল বিশ্বশান্তিকে বিঘ্নিত করছে।

ছবি: সৈকত দাস 

আহমদ হাসান ইমরান বলেন, যখন ওমানে ইরানের শান্তি আলোচনা চলছে। সেই সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু চক্রান্ত করে ইরানের উপর হামলা চালাল। ইরান নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য পালটা আক্রমণ করেছে। ইরানের নামে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে যে তারা পারমাণবিক শক্তি সঞ্চয় করছে, বোমা তৈরি উদ্দেশ্যে। কিন্তু তারা আন্তর্জাতিক পরমাণু সহযোগী সংস্থার কাছে জানিয়েছে, একে মানব কল্যাণের কাজে লাগাবে। ইমরান প্রশ্ন তোলেন, যে দেশের কাছে ৯০ থেকে ১৫০ টি পরমাণু অস্ত্র আছে, তারাই আবার অন্যদেরকে হুমকি দিচ্ছে কীভাবে?  অন্য প্রসঙ্গে আহমদ হাসান ইমরান বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে যেভাবে একের পর এক ফিলিস্তিনিদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে এবং গণহত্যায় প্রায় ৫৬ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা ও ১ লাখ ৩৬ হাজার মানুষকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।  এই গণহত্যা নিয়ে বিশ্ববাসী কেন নীরব তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইমরান। 

মিল্লি কাউন্সিলের সাহুদ আলম বলেন, যুদ্ধ কোনও সমাধান হতে পারে না কিন্তু নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ইরান যা করেছে আমরা তাকে সমর্থন করি। একই কথা উপর গুরুত্ব আরোপ করেন সমাজকর্মী কামরুদ্দীন মল্লিক, গোলাম মুহাম্মদ, বেলুড় মঠের স্বামী পরমানন্দজি মহারাজ প্রমুখ।

বিশিষ্ট গবেষক ও সমাজকর্মী সাবির আহমেদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। সারা পৃথিবী যেভাবে নীরবতা পালন করছে ফলে প্রশ্ন জাগে, আমরা সুসভ্য নাকি অসভ্যতার দিকে এগোচ্ছি? আমেরিকার রাষ্ট্রপতি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার জন্য অশান্তি তৈরি করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্য প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের দেশেও এরকম একটি সরকার আছে যারা ঘৃণা-বিদ্বেষ এবং জুলুমকে প্রাধান্য দিচ্ছে। দুনিয়াজুড়ে চলমান সন্ত্রাস ও ইসলামো-ফোবিয়ার বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। 

এ দিকে ইমাম সংগঠনের তরফে মাওলানা আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি নির্যাতনের খবর সামনে আসছিল আমরা প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন করে সরব হয়েছি। আমরা সব জায়গায় শান্তি-সম্প্রীতির পক্ষে। যে কোনও দেশের নির্যাতিত মানুষের হয়ে আমরা প্রতিবাদ করি। নেশা-মুক্ত সমাজের জন্য আমরা সবার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে আগ্রহী এবং করে চলেছি। নদিয়ার শিশু তামান্নার খুনের ঘটনা নিয়েও আশা ব্যক্ত করেন, সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে। সংগঠনের সভাপতি শফিক কাসেমী একইভাবে বলেন, আমরা শান্তির পক্ষে। ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য, মজলুমের উপর বেশি নির্যাতন করবেন না। এরকম করতে থাকলে সৃষ্টিকর্তা আপনাদের ক্ষমতা কেড়ে ধূলিসাৎ করে দেবেন। ইরানি জনগণের সাহস বলেই আমেরিকার ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

(সৌজন্যে– পুবের কলম)

Post a Comment

0 Comments