সংবিধান হত্যা দিবস: রোজ যেখানে খুন হচ্ছে সংবিধান!

আসিফ রেজা আনসারী

ঘোষিত জরুরি অবস্থা সংবিধানের একটা অংশ। আইনকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র জরুরি অবস্থার মাধ্যমে জনগণের অধিকার এবং স্বাভাবিক ছন্দকে কিছুটা হলেও ব্যাহত করতে পারে। যা কংগ্রেস আমলে হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেই ভুল স্বীকার করেছে জাতীয় কংগ্রেস। কিন্তু প্রশ্ন হল বর্তমান সরকার এবং আরএসএস-বিজেপি হঠাৎ করে সংবিধান হত্যা দিবস পালন করছে কেন? তাদের এই পালনের কোনও নৈতিক অধিকার কি আছে? এমনই বেশ কিছু প্রশ্ন আমাদের সামনে রয়েছে।

প্রতীকী ছবি

উত্তরটা অত্যন্ত সহজ। আরএসএস এবং বিজেপির কোনও নৈতিক অধিকার নেই এই দিনটি পালন করার। বরং এটি চরম হাস্যকর এবং তাদের জন্য লজ্জার। যেভাবে প্রতিদিন সংবিধানকে হত্যা করা হচ্ছে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সবকিছুতেই দলীয়করণ করা হচ্ছে, স্বাধীন ও স্বশাসিত সংস্থাগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে, সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করছে কেন্দ্রীয় সরকার, স্থানীয় প্রশাসন কিংবা রাজ্য সরকারের উপরেও নানাভাবে হস্তক্ষেপ করছে, তাতে রোজ খুন হয় সংবিধান। সংখ্যালঘু, দলিত বিশেষ করে মুসলিমদের উপর উত্তরোত্তর যেভাবে নির্যাতনকে চরম মাত্রায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, অর্থাৎ সংবিধানের মৌলিক কাঠামো আক্রান্ত হচ্ছে রোজ। বিশেষ করে গণতন্ত্র, সমাধিকার, স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণ এর অধিকার ইত্যাদি অর্থাৎ ১৪, ১৫, ২১ এবং ২৬ থেকে ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লঙ্ঘিত হচ্ছে এই বিজেপির আমলে। সেইখানে দাঁড়িয়ে সংবিধান হত্যা দিবস অত্যন্ত হাস্যকর, লজ্জার এবং প্রতিবাদযোগ্য।

ইতিহাস বলছে, ১৯৭৫ সালে আজকের দিনে যখন জরুরি অবস্থা চালু হয়েছিল, সেসময় আরএসএসের কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং সেই পর্বকে বলেছিলেন অনুশাসন পর্ব। জরুরি অবস্থাকে সমর্থন করেছিল এই বিজেপির মূল শক্তি আরএসএস। আর তারাই আজকে বড় কথা বলছে! 

Post a Comment

0 Comments