বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: বুধবার রাজ্যের প্রধানশিক্ষক সংগঠন এএসএফএইচএম-এর পক্ষ থেকে রাজ্যের শিক্ষার সদর দফতর বিকাশ ভবনে রাজ্যের হাইস্কুল এবং হাইমাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক ও শিক্ষিকাদের পে স্কেলের বঞ্চনার দীর্ঘ ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। বিগত ডেপুটেশনের সময় স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রধানসচিব এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজ্য শিক্ষা দফতরের পরামর্শ দাতা এবং কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন -এই দুজনকে। পূজার আগে তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের দাবি সনদ এর প্রত্যেকটি পয়েন্ট খুব মনোযোগ দিয়ে শুনেছিলেন এবং সেই সময় বলেছিলেন মাদ্রাসা- হাই -হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল ও মাদ্রাসাগুলির প্রধানশিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন বঞ্চনার বিস্তারিত রিপোর্ট ২৩ অক্টোবর,'২৪ তারিখে বিকাশ ভবনে সংগঠনের প্রতিনিধিদল মতামত জানাবেন। সে মোতাবেক দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন তথ্য সহকারে সরকারী শিক্ষা অধিকারিকগণ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ১৯৪৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দিনের পর দিন তাঁদের ক্রমাগত বেতন বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরেন।
Photo by Source |
এইদিন প্রতিনিধিদল বলেন, তাঁদের কাজের বহর বেড়েছে শতগুন, কিন্তু অন্যদের সাপেক্ষে তাঁদের ক্রমাগত বেতন কমেছে । তাঁরা বলেন ১৯৮১ সালের রোপায় তাঁদের হায়ার ইনিশিয়াল স্টার্ট হিসাবে ৭টা ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছিল, ১৯৯০ সালে তিন টি ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৮ সালের রোপায় এসে তাঁদের হায়ার ইনিশিয়াল স্টার্ট একদম বন্ধ করে দেওয়া হলো। অন্যদের ক্ষেত্রে সেটা করা হলো না। প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাগণ দুশো টাকা এজিপি, যেটা তাঁদের বেসিকের অঙ্গ ছিল উনিশের রোপায় এসে সেই বেসিক থেকে ২০০ টাকা বাদ দিয়ে তাঁদের ফিক্সেশন করাতে বাধ্য করা হলো। যদি ঐ ২০০ টাকা বেসিকের সঙ্গে যুক্ত থাকত তাহলে তাঁদের ডি এ সহ পেনশনারি বেনিফিট সবই তাঁরা পেতেন । পরিবর্তে ছেলে ভোলানো ৫০০ টাকা অ্যাডিশনাল রেমুনারেশন দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাগণের তাও নেই। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ ৪০০ টাকা সাম্মানিক পেয়ে থাকেন। ২৭.২.২০০৯ এর পরে যে সমস্ত প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে যোগদান করেছেন তাঁদের একটা ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার জন্য অর্ডার করার অনুরোধ করা হয় এবং জানানো হয় যে সরকার যেহেতু প্রত্যেকটা কোর্ট কেসে হেরে যাচ্ছেন, সুদসহ টাকাও ফেরত দিতে হচ্ছে , আবার কোর্টের জন্য সরকার টাকা খরচ করছে। অথচ এ বিষয়ে একটা অর্ডার করতে অসুবিধা কোথায়? একই সঙ্গে হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাগণ যাতে এ্যাডিশনাল রেমুনারেশন পান তার ব্যবস্থা গ্রহণ সহ অন্যান্য সমস্ত আর্থিক বিষয় যেখানে স্কুল ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাগণ আর্থিকভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন সেই বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। রাজ্যের স্কুল এবং হাই মাদ্রাসা চলতি বছরে অদ্যাবধি কোন একমাত্র সরকারি অনুদান কম্পোজিট গ্রান্ট পেলো না।সে বিষয়ে শিক্ষা দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
এরপর ঐ প্রতিনিধিদল মাদ্রাসার ডি এম ই সেকশনে ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা দেখা করেন। বিভিন্ন অর্ডারের যেমন টোয়েন্টি ইয়ার্স বেনিফিট,প্যাটারনিটি লিভ, আড়াইশো কিলোমিটার দূরে চাকরি করলে ফুল হাউস রেন্ট ইত্যাদির ম্যাচিং অর্ডার এর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো যাতে দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয় প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে। এর পর ঐ প্রতিনিধিদল স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দেখা করে উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদের ভুল ভাল তালিকা সংশোষধনের কথা জোর দিয়ে বলা হয়। যে সকল বিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা বেশি এবং শূন্য পদের সংখ্যা বেশি সেই সকল বিদ্যালয় যাতে কোনভাবেই বাদ না যায় তাকে সুনিশ্চিত করতে হবে শিক্ষা দপ্তর সহ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে।
এই ডেপুটেশনের প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি, ইন্টার -ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর আলতাপ সেখ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ডঃ মিনু পাল, সহ-সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক এবং গভর্নিং বডির সদস্য কাজল কান্তি বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিষ্ণুপদ শিট প্রমুখ।
0 Comments