বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিষেবা নিয়ে মারাত্মক লবিবাজি চলছে রাজ্যে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির মাথায় বসে আছেন বড় বড় দুর্নীতিবাজরা। তারাই রাজ্যজুড়ে চালাচ্ছেন মাফিয়ারাজ। এমনই মারাত্মক অভিযোগ করছেন সিনিয়র ডাক্তাররা। আর তাই মাঠে নামল ডাক্তাররা। কাউন্সিলের এই দুর্নীতি বন্ধে অভিযান করে ডাক্তারদের সংগঠন জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস, পশ্চিমবঙ্গ।
এমনই নানান অভিযোগকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল কাউন্সিল অভিযান করে ডাক্তাররা। সংগঠনটির অভিযোগ, মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ২০১৯ সালের অক্টোবরে অবসর নেওয়ার পর প্রায় ৫বছর এক্সটেনশন পেয়ে পদ আগলে পড়ে আছেন। জানা যায় উনি নাকি উচ্চমাধ্যমিক পাস। স্নাতক ডিগ্রি কোথাকার সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে। একটি আরটিআই হয়েছিল ওনার কোয়ালিফিকেশন জানতে। যোগ্য ব্যক্তিকে ডিঙিয়ে কোনও অজ্ঞাত কারণে রেজিস্ট্রার হয়ে গিয়েছিলেন। ওনার ওই পদে থাকার যোগ্যতা নেই। আর দরকারও নেই। ২০২২ সালের মেডিক্যাল কাউন্সিল নির্বাচন উনি দায়িত্ব নিয়ে প্রহসনে পরিণত করে উত্তরবঙ্গ লবিকে জিতিয়ে ছিলেন। ওনাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
ডাক্তারদের কথায়, শোনা যাচ্ছে মেডিক্যাল কাউন্সিল সদস্যদের অনেকেই নাকি পদত্যাগ করেছেন। জানতে চাইতে হবে তাঁরা কারা। তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে কিনা। না হলে তাঁদের পদত্যাগপত্র এখনই গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষক চিকিৎসক কেন্দ্রে একজন সদস্য ২০২৪ সালের ৫ই জানুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন। এই ক্ষেত্রে দু মাসের মধ্যে নির্বাচন করার কথা। কেন হয়নি ,কবে হবে জানাতে হবে বলেও দাবি করেন ডাক্তাররা।
আরও বলা হয়েছে, পেনাল ও এথিক্যাল কমিটির বহু সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। কাউন্সিল নির্দিষ্ট সংখ্যার সীমার বাইরে অসংখ্য পিই কমিটি তৈরি করা হয়েছে কাউন্সিলকে রাজনীতির আখড়া বানানোর জন্যে। মেডিক্যাল কলেজগুলোতে জুনিয়ার ডাক্তারদের তৈরি করা থ্রেট সিন্ডিকেট তালিকায় এই কমিটিগুলোর বহু সদস্যের নাম আছে। সমস্ত পিই কমিটি ভেঙে দিতে হবে।
জয়েন্ট প্লাটফর্মঅফ ডক্টরসের দাবি, যে সমস্ত সদস্যের বিরুদ্ধে সিবিআই বা ইডি তদন্ত করছে, তাঁরা কারা এবং তাদের সম্পর্কে মেডিক্যাল কাউন্সিল কি ব্যবস্থা নিয়েছে জানাতে হবে। মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও থ্রেট সিন্ডিকেট চালানোর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ওনাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। যে সমস্ত কাউন্সিল সদস্য বা চিকিৎসক অভয়ার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্যে পরোক্ষভাবে জড়িত বা তথ্য প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করেছেন এবং প্রশাসন যাদেরকে সরকারি পদ থেকে সাসপেন্ড করে ডিপি চালু করেছেন তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হবে।
আরও দাবি করা হয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল একটা হুমকি সংস্কৃতি ও দুর্নীতি সিন্ডিকেটের আতুরঘর হয়ে উঠেছে। ২০২২ সালে কাউন্সিল নির্বাচনে নানা রঙের ব্যালট, প্রার্থী ডাঃ অর্জুন দাশগুপ্তের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, জালিয়াতি করে অতিরিক্ত ভোট দিয়ে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্মের হাজার হাজার প্যানেল ভোট নষ্ট করা সহ নানা রকম ভাবে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা হয়। এই অনৈতিক মেডিক্যাল কাউন্সিল অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে।
0 Comments