ভোট-ময়দানে এসডিপিআই, লাভ-ক্ষতির সামনে বিজেপি-তৃণমূল

আসিফ রেজা আনসারী

সামনেই লোকসভা নির্বাচন। হাতে আর মাত্র কয়েকটি মাস। এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। দিল্লির ভারতমণ্ডপমে হয়েছে দলের বৈঠক। সেই বৈঠকে দলের নেতাকর্মীদের কাছে এককভাবে ৩৭০ এবং এনডিএ-র ৪০০ পার করার টার্গেট বেঁধে দিয়েছে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। বতর্মান সরকার কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা রদ-সহ নানান কাজ করেছে। সম্প্রতি রামমন্দির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে, দেশজুড়ে মানুষের মন বুঝতে এবং ঘৃণার বিরুদ্ধে 'ভালোবাসা' ছড়িয়ে ভারত জোড়ো যাত্রা করছেন রাহুল গান্ধি। অন্যান্য দলও ভোট-কৌশল ঠিক করছে। এ দিকে রাজ্য-রাজনীতির ময়দানে চর্চায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছুদিন অন্তরালে থাকার পর সম্প্রতি ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে মুখ দেখিয়েছেন তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় কথা বলেছেন। সামনের ভোটকে তিনি পাখির চোখ করছেন, তা বলা বাহুল্য।

File Photo

সব ঠিক আছে, কিন্তু আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সেভাবে নাম না থাকা রাজনৈতিক দলের লড়াই দেখবে বাংলা। তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস বা আইএসএফের পাশাপাশি ২৪ এর লোকসভা ভোটে রাজ্যে লড়বে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অব ইন্ডিয়া  বা এসডিপিআই। শুধু তাই নয় অন্যান্য রাজ্যেও প্রার্থী দিতে চলেছে ওই দল। দলের নেতারা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের সাতটি লোকসভা আসনে লড়াই করবে এসডিপিআই। লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছে তারা। জানা গিয়েছে, কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণ বা যাদবপুর আসনে লড়াইয়ের করবে এই দল। পাশাপাশি রয়েছে অধীর চৌধুরীর নির্বাচনীক্ষেত্র বহরমপুর, জেলার জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ এবং মালদা দক্ষিণ আসন। রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যত বলতে গেলে বিশবাঁও জলে, এই পরিস্থিতিতে এসডিপিআই লড়াইয়ের ময়দানে।

পশ্চিমবঙ্গে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকেই বিজেপিকে রুখতে ভূমিকা পালন করা দরকার বলে মনে করে এসডিপিআই।  দলের নেতাদের যুক্তি,  তৃণমূল কংগ্রেস যেহেতু ক্ষমতায় আছে ফলে বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা  ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গেই। অন্যান্য দলের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন জড়িয়ে আছে এখানে। তাই তৃণমূলকে জোট করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে এই জোট হবে কিনা হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। এক প্রকার ধরে নেওয়া যাচ্ছে  কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কিংবা বাম-তৃণমূল-কংগ্রেসের মধ্যে আসন রফা হচ্ছে না। ফলে কংগ্রেস এবং বামেরা নিজেদের মতো করে জোটের কথা ভাবতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে এসডিপিআই চেয়েছিল আইএসএফ, ওয়েলফেয়ার পার্টি  এবং তাদের মধ্যে একটি জোট হোক। মুর্শিদাবাদের মোট তিনটি আসনের মধ্যে নিজেদের মধ্যে একটি করে ভাগাভাগি করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু সেই সম্ভাবনাও বাস্তবে রূপ পাচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের মতো করে ভোটের ময়দানে নামতে চলেছে এসডিপিআই। এই পরিস্থিতিতে ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে বিজেপির লাভ হতে পারে। এক্ষেত্রে এসডিপিআই-এর রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম-এর যুক্তি- বিজেপিকে রুখতে বড় দলগুলিকে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। তারা যখন নিজেদের স্বার্থে মানুষের কথা না ভেবে কোনও পদক্ষেপ করছে না, তখন আমাদেরইবা কি করার আছে। এই পরিস্থিতিতে লাভ-ক্ষতির মুখে কারা পড়বে,  কিংবা ভবিষ্যতে কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াই এ দলের  ভোট-যুদ্ধ বলবে সময়।

Post a Comment

0 Comments