বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হচ্ছেন স্বয়ং রাজ্যপাল, আর সেই প্রতিষ্ঠানে সীমাহীন দুর্নীতি হচ্ছে। বিভিন্ন মহলে এমন অভিযোগ ওঠার পরেও কোনো উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ সামনে এলো। এ নিয়ে কলকাতা প্রেস ক্লাবে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন হয়। যেখানেই উঠে আসে জাদুঘরের নানান দুর্নীতির কথা। এখানেই শেষ নয় এ বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে গেলে উদ্যোক্তাদের সভায় বিশৃঙ্খলা তৈরির ঘটনাও সামনে এসেছে। আর এ নিয়ে বিস্তারিত আকারে তুলে ধরেছে উদ্যোক্তা সংস্থা অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পশ্চিমবঙ্গ শাখা।
একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে হিন্দু মহাসভা। যেখানে বলা হয়েছে, "প্রেস ক্লাবে অখিলভারত হিন্দুমহাসভার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনআন্দোলন বিষয়ে প্রেসমিট চলার সময় দুই জন দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে নিজেদের মহাসভার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। তাদের বক্তব্য হিন্দুমহাসভা কেন ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে হওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রেসমিট করবে, কারণ সেটি মিউজিয়ামের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তাই হিন্দু মহাসভার এই বিষয়ে বক্তব্য রাখা অনুচিত। এই সময় এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলেও দ্রুত হিন্দুমহাসভার প্রকৃত কর্মীরা এবং প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ এসে দুইজন দুষ্কৃতীকারিকে বাইরে বার করে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে প্রেসমিট শুরু হয়। অখিলভারত হিন্দুমহাসভার মিডিয়া কনভেনর অনামিকা দে সভার শুরুতেই ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে বিগত বছর গুলোতে ঘটে যাওয়া নারী নির্যাতন, গুলি চালিয়ে কর্মী খুন, CAG-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে বহু কোটি টাকার তছরুপ, অবৈধ চাকরি ইত্যাদি বিষয়ের তথ্যভিত্তিক বিবৃতি দেন। এরপর রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী ভারতীয় জাদুঘরের কর্মীরা যে চিঠি দিয়ে হিন্দু মহাসভাকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনআন্দোলনে সহযোগিতা করার জন্য আবেদন করেছেন সেই চিঠির উল্লেখ করে, উনি যে দীর্ঘদিন ধরেই ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে একাধিক সাংগঠনিক মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেছেন তার তথ্য তুলে ধরেন। শুধু তাই নয় বর্তমান এডুকেশন অফিসার সায়ন ভট্টাচার্য্য এবং প্রাক্তন ডিরেক্টর রাজেশ পুরোহিত পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও গর্হিত অপরাধের বিষয়ে যে একাধিক তথ্য চন্দ্রচূড়বাবুকে দিয়েছেন সেই তথ্যগুলো তুলে ধরেন। এরপর মহাসভা এই বিষয়ে রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেও কেন রাজ্যপাল মিউজিয়ামে ঘটে যাওয়া একের পর এক দুর্নীতির বিষয়ে নিশ্চুপ সেই বিষয়ে রাজ্যপালকে একহাত নেন চন্দ্রচূড় গোস্বামী। এরপর রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য দীপ্তিশ গুহ NRC ও CAA বিষয়ে হিন্দু মহাসভার অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং নাগরিক পঞ্জিকরণ সম্পূর্ন না হলে যে নির্বাচন প্রক্রিয়াটি ত্রুটিপূর্ণ সেই বিষয় তুলে ধরেন। রাজ্য কমিটির আরেক সদস্যা শ্রাবণী মুখার্জী এরপর আগামী লোকসভা নির্বাচনে এবং জনআন্দোলনে হিন্দুমহাসভা ঠিক কোন কোন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক বিষয়কে গুরুত্ব দিতে চলেছে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরেন। এরপর রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সাংবাদিকদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেন এবং সভার শুরুতে দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়ে সভা পন্ড করার যে চেষ্টা করে সেই বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে বলেন মূলত মেকি হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দলই হিন্দু মহাসভার উপস্থিতিকে ভয় পেয়ে মিউজিয়ামের দুর্নীতিবাজদের সাথে হাত মিলিয়ে প্রেস ক্লাবে দুইজন গুন্ডা পাঠিয়েছিল। কিন্তু দিনের শেষে সত্যেরই জয় হয় সেই বিষয় উল্লেখ করে এবং উপস্থিত সবাইকে হিন্দু মহাসভার Food For Humanity প্রজেক্টে ও আসন্ন সরস্বতী পূজায় উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান"
0 Comments