সমাজবার্তার অনুষ্ঠানে সমাজ-উন্নয়নে শক্ত মেরুদণ্ডের সাহিত্যিক ও সাংবাদিকতার সওয়াল বিশিষ্টদের

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: মেরুদণ্ড সোজা করা সাংবাদিকতাই দিশা দেখাতে পারে সমাজ উন্নয়নের, নচেৎ হলুদ সাংবাদিকতা সমাজকে ধ্বংস করবে। চাটুকার সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় সমাজের কিছুই হয় না। রবিবার বানতলায় অবস্থিত গাইডেন্স অ্যাকাডেমির সভাঘরে সমাজবার্তা সংবাদপত্রের এক আলোচনাসভায় এমনই অভিমত ব্যক্ত করেন বিশিষ্টজনের।

ছবিতে মুজিবর রহমানকে সম্মাননা প্রদান

এ দিন মুর্শিদাবাদ থেকে প্রকাশিত সমাজবার্তা সংবাদপত্রের উদ্যোগে 'আর্থসামাজিক উন্নয়নে সাংবাদিকতা এবং সাহিত্যের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনাসভা হয় গাইডেন্স অ্যাকাডেমির সভাঘরে। এই আলোচনাসভায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট এক চিকিৎসক। সকলেই সাংবাদিকতার গুরুত্ব এবং সংবাদপত্রের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন। এছাড়াও ধর্ম এবং রাজনীতির আন্তঃসম্পর্ক এবং তার দর্শনচিন্তার উপর বিশেষ গুরুত্ব উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন গাইডেন্সের কর্ণধার ইমদাদুল হক।

এ দিনের অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্যচিত্র নির্মাতা মুজিবর রহমান, কবি সাগির হাসনাইন, সমাজসেবী জানে আলম, কবি আব্দুল মান্নান, ডা. কাজী মুহিত, সাংবাদিক মুহাম্মদ সাদউদ্দিন, শেখ ইবাদুল ইসলাম, জাহানারা খাতুন, বেঙ্গল মিররের সম্পাদক আসিফ রেজা আনসারী, কবি আব্দুস সালাম, লিয়াকত আলী প্রমুখ। অনেকেই স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।

চলছে কবিতা পাঠ

অন্যদিকে প্রধান আলোচক সাদউদ্দিন বর্তমান যুগের সাংবাদিকদের জ্ঞানচর্চার খামতির নানান দিক তুলে ধরেন। বিভিন্নভাবে সমাজে নানান অবদান রাখার পরেও বহু মানুষকে বর্তমানে সাংবাদিকরা মনে রাখেন না কিংবা তাদের সম্পর্কে যে জানেন না, এ নিয়ে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি কাজী শামসুদ্দিন, আব্দুল হালিম প্রমুখের নাম উচ্চারণ করেন। তিনি এক কথা প্রসঙ্গে বলেন, সব সময় সাংবাদিক বা লেখক সাহিত্যিকদের সঙ্গে অন্যের মতের মিল হবে এমন কথা নয় কিন্তু মতের মিল না হলেও তাদের যে গুরুত্ব আছে এটা বুঝতে হবে। এখানে তিনি রুশ বিপ্লবের পুরোধা লেনিনের সঙ্গে লিও টলস্টয়ের কথা তুলে ধরেন। একজন সাহিত্যিক কিংবা সাংবাদিক কিভাবে সমাজ উন্নয়নে বা সমাজ বদলে অবদান রাখতে পারে এ প্রসঙ্গে তিনি সমবায় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। সাহিত্যের কি প্রয়োজনীয়তা আছে কিংবা সাংবাদিকের সঙ্গে সাহিত্যিকের কি সম্পর্ক এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখা করেন শেখ ইবাদুল ইসলাম। বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক নাজিব ওয়াদুদ বলেন, দৈনিক কাগজের সঙ্গে সাময়িকপত্রের একটি পার্থক্য রয়েছে। তা কথায়, দৈনিক কাগজ সবসময় টাটকা খবর মানুষকে প্রদান করে, এক্ষেত্রে সাময়িকপত্রগুলো বাছাইকৃত এবং সমাজের গভীরে থাকা সমস্যা তুলে ধরতে অবদান রাখে। ফিলিস্তিনের শত শত শিশু-নারীর খুন ও ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে কবিতা পাঠ করেন মুজিবর রহমান, শাহ কামালরা।

অন্যদিকে ফেসবুককে কাজে লাগিয়ে কিভাবে একটি সাহিত্যগোষ্ঠী গড়ে উঠছে কিংবা তার ডাকে সাড়া দিয়ে বহু মানুষ কলকাতায় সমাজবার্তার অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করেছে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন পত্রিকার সম্পাদক মুহাম্মদ মুস্তফা শেখ। গাইডেন্স অ্যাকাডেমি বিশেষভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি। বিশিষ্ট অতিথিদের সম্মাননাও জ্ঞাপন করা হয়। 

Post a Comment

0 Comments