ফায়জানের খুনিদের আড়াল করা হচ্ছে কেন? প্রশ্ন সেলিমের

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: যাদবপুরের ছাত্রের র‌্যাগিং ও খুনের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য-রাজনীতির পারদ ঊর্দ্ধমুখী, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বামেদের দিকে আঙুল  তুলেছেন। অন্যদিকে ঘটনার পর পুলিশি তদন্তে নানান তথ্য সামনে আসছে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে কলকাতা পুলিশ। এবার এরই ফাঁকে ফের আইআইটি খড়গপুরের ছাত্র-খুন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাগিং-এর অভিযোগ ও ছাত্র মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির একাধিক নেতা এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাম এবং সিপিএমের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন। এ নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন মুহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, তারা বড় বড় কথা বলছে, তাহলে খড়গপুর আইআইটির পড়ুয়া ফায়জান আহমেদের খুনের ঘটনা নিয়ে কেন চুপ রয়েছে? তদন্তকে চাপা দিতে বারবার রাজ্য সরকার আদালতে যাচ্ছে, পুলিশ কোনও কাজ করছে না বলেও অভিযোগ করেন সেলিম। পাশাপাশি তাঁর দাবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন সেলিম। সেখানেই যাদবপুরের ছাত্রর মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক। পাশাপাশি খড়গপুর আইআইটির পড়ুয়া ফায়জান আহমেদের খুনিদের চিহ্নিত করার জোরালো দাবি তোলেন সাবেক সাংসদ।



এ দিন মুহাম্মদ সেলিম বলেন, আইআইটিগুলোতে অনেক র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সেভাবে দোষীরা ধরা পড়ছে না। সেলিম ফায়জান আহমেদ প্রসঙ্গে বলেন, একজন মেধাবী পড়ুয়া অসমের তিনসুকিয়া থেকে পড়াশোনা করতে এসেছিলেন। আর তাকে যেভাবে খুন করা হয়েছে তা দুর্ভাগ্যজনক। ফায়জান আহমেদের খুনের ঘটনায় বারবার কেন তার মা রেহানা আহমেদকে আদালতে যেতে হচ্ছে, পুলিশ কেন সঠিক তদন্ত করছে না? সে সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলেন সেলিম। তিনি বলেন,  আজকে যাদবপুর নিয়ে বিজেপি বা তৃণমূলের নেতারা বড় বড় কথা বলছেন, কিন্তু ফায়জান নিয়ে সবাই চুপ! আদালতে গিয়ে পুলিশ বারবার তদন্ত প্রক্রিয়া আটকানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন সিপিএম নেতা। নাম না করে শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে গিয়ে সেলিমের প্রশ্ন, বিজেপি নেতারা র‌্যাগিং নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন, খড়গপুর নিয়ে চুপ কেন? তবে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ও খুনের তদন্ত করার নির্দেশ নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করেন তিনি।


প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবার মাসে রহস্যজনকভাবে মারা যান খড়গপুর আইআইটির পড়ুয়া ফায়জান আহমেদ। প্রথমে পুলিশ দাবি করে সে আত্মহত্যা করেছে। তারপর আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হয়। তাতেই বিশেষজ্ঞরা জানান- আত্মহত্যা হয়, ফয়জানকে খুন করা হয়েছিল। এ নিয়ে মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দেন, সিট তদন্ত করবে। তিনি সদস্যদের নামও জানান। সেই সিট তদন্ত শুরু করতেই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য। এ নিয়ে গত বুববার কলকাতা উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। কোর্ট সিট-এর হাতেই তদন্তভার রাখে। ডিভিশন বেঞ্চের আরও নির্দেশ ছিল, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশের এডিজি (হেড কোয়ার্টার) কে জয়রামনের নেতৃত্বেই তদন্ত হবে। শুধু তাই নয়, প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘আর কত দিন? মা-বাবা আর কতদিন অপেক্ষা করবেন? এই ঘটনা প্রতিষ্ঠানের মানকে নষ্ট করছে।’

Post a Comment

0 Comments