ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস-'২০’র প্রথম দশে বাংলার প্রীতম ও সুতপা, তালিকায় আরও ৩ কৃতী

আসিফ রেজা আনসারী

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে, ইউপিএসসি-র ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস-২০২০'এর ফলাফল। তাতে নজরকাড়া ফল করেছে বাংলার পাঁচ প্রতিযোগী। শুধু তাই নয়, দেশের সেরাদের মধ্যে পঞ্চম স্থান করেছেন কলকাতার প্রীতম সেন। আর এক প্রতিযোগী সুতপা ঘোষ প্রথম দশের মধ্যে স্থান অধিকার করেছেন। অন্য তিনজন হলেন আদিত্য মণ্ডল, অঙ্কিতা মণ্ডল ও অমিত সাহা। যাদের স্থান যথাক্রমে ২৫, ৪১ ও ৪২।

পাঁচ-সাত বছর আগে রাজ্য তথা কলকাতা থেকে অনেকেই এই পরীক্ষায় সফল হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজের সুযোগ পেতেন। কিছুদিন ধরে বাংলার ছেলেমেয়েদের রেজাল্ট তেমন ভালো হত না। ফলে দেশের মোট ৫০ জনের মধ্যে বাংলা থেকে ৫ জনের স্থান পাওয়াকে আশার আলো হিসাবেই দেখছে শিক্ষামহল। তাঁদের আশা, আগামীদিনে আরও নতুন নতুন ছেলেমেয়ে আইএএস বা আইপিএস পদমর্যাদার সমতুল ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিসে আসবেন।


জানা গিয়েছে, প্রীতম সেনের বাড়ি কলকাতার বাঁশদ্রোণী এলাকায়। প্রীতম সেন জানান, যৌথ পরিবারের বড় হয়েছেন তিনি। ২০১১ সালে পাঠভবন থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে আশুতোষ কলেজে স্ট্যাটিস্টিক্যাল অনার্সে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে স্নাতক হয়ে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে এমএসসি করেন। এরই মধ্যে কলকাতা ওমেন্স খ্রিস্টিয়ান কলেজে অধ্যাপন শুরু করেন। ২০১৯ সালে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষা পাশ করেন, কিন্তু ইন্টারভিউয়ে আটকে যান। এবার সব ধাপ পেরিয়ে দেশের মধ্যে ৫ম স্থান অধিকার করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, সল্টলেকের বাসিন্দা সুতপা ঘোষ ২০১৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে স্ট্যাটিস্টিক্যাল অনার্স পাশ করেন। তারপর এমএসসি করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। ২০১৬ সালে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার কোচিংয়ের জন্য ভর্তি হন। শুরু হয় পড়াশোনা। বেশ কিছু কঠিন পরীক্ষা পাশ ডব্লিউবিসিএস-২০১৯ গ্রুপ এ’তে রেভিনিউ সার্ভিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার হিসাবে সিলেকটেড হয়েছেন তিনি। কোথাও জয়েন করেননি। তাঁর স্বপ্ন ছিল ইউপিএসসি’র কোনও পরীক্ষায় সফল হওয়া। তাঁর সাফল্যের জন্য অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সুতপা ঘোষ।
তিনি বলেন, অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন দেখি ইন্সটিটিউট থেকেও ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিসের মতো দিয়েছে যে, কলকাতার কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেও ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষা পাশ করা যায়।

সুপতা ঘোষ আরও বলেন, বরাবরই সোশ্যাল মিডিয়াকে এড়িয়ে গিয়েছি। আমি ডব্লিউবিসিএস এবং ইউপিএসসি জেনারেল স্টাডিজের প্রস্তুতির জন্য সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করেছি অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশনের উপর। সামিম স্যার বরাবর আমাকে মনোবল ও উৎসাহ জুগিয়েছেন। আমি প্রত্যেকটা ক্লাস মনোযোগ দিয়ে শুনতাম, নোটস মেটেরিয়ালগুলো খুব ভালোভাবে পড়তাম এবং প্রত্যেকটা মক টেস্ট ভীষণ সিরিয়াসলি দিতাম।
নতুনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তুমি তোমার নিজের মতো করে সাফল্যের সূত্রকে খুঁজে বার করো। অবশ্যই সঠিক বইপত্র পড়া দরকার। সেইসব বইপত্র খুঁজে নিতে হবে যেগুলি প্রাসঙ্গিক এবং যে পরীক্ষাটা দেওয়া হচ্ছে তারজন্য একেবারে উপযুক্ত।
এ দিকে গোট দেশে সংংখ্যালঘুদের মধ্য থেকে যে তিনজন পাশ করেছেন তাঁরা হলেন, নউসিন মুসাররফ, নিগার ফাতেমা ও আয়েশা জুহি নিযাম। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস-২০২০’তে তাঁদের র্যাঙ্ক যথাক্রমে ৬, ২৩ ও ২৬।

Post a Comment

0 Comments