সিনেমাটোগ্রাফ আইন: সরকারের হাতে বেশি ক্ষমতা আসলে বাক্-স্বাধীনতা হরণের নয়া ফরমান

আবু সামিম

সম্প্রতি বাক্-স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, মোদি সরকার বাক-স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। তাতে সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, নয়া কৃষি আইন এসবের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হোক কিংবা বিহার উত্তরপ্রদেশ সরকারের অনাচারের বিরুদ্ধে মুখ খোলা১ সবেতেই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে নেমে এসেছে সরকারি খাঁড়া, রাষ্ট্রদ্রোহের আইন। এবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের উপরেও হস্তক্ষেপ করতে চাইছে সরকার। সিনেমায় এবার বন্ধ হবে পরিচালকের নিজস্ব ভাবনা, মানুষের সমস্যা কেন্দ্রিক প্রতিবাদের সুর ইত্যাদি। কেননা, সরকার সিনেমাটোগ্রাফি আইন সংশোধন করতে চলেছে। তাতে সরকার পাচ্ছে অবাধ স্বাধীনতা পক্ষান্তরে সিনেমা কর্মীদের বাক্-স্বাধীনতায় লাগাম পরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এমনই অভিযোগ উঠছে।

প্রসঙ্গত, সিনেমাটোগ্রাফ নতুন আইনে পরিষ্কার বলা আছে; কোনো ফিল্ম তৈরি করতে গেলে সরকারের নির্দেশনা প্রয়োজন। সরকারই ফিল্মের শেষ শট পর্যন্ত নজর রাখবে। এখানেই গল্প শেষ না, গল্প শুরু হয়েছে ফিল্মি জগতে। একটি জুডিশিয়াল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডের দায়িত্ব হল সরকারের বিরুদ্ধে যাতে কোনও সিনেমা বা ভিডিয়ো না হয় তার খেয়াল রাখা। ওই আইনে বলা হয়েছে কেউ সরকারের বিপক্ষে আওয়াজ তুলতে পারবে না।

২০০০ সালে, ২৮-শে নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশ করে সংবিধানের ক্ষমতার বিভাজন নীতি। শুক্রবার সেই বিলের প্রস্তাব রাখা হয় মিনিষ্ট্রি অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড ব্রডকাস্টিং-এর তরফ থেকে। বলা হয় ১৯৫২ সালের  সিনেমাটোগ্রাফ আইনের চারটি সংশোধন করা হবে।

নয়া প্রস্তাবে বলা হয়।
১) প্রতি দশ বছর অন্তর 'সেন্সর সার্টিফিকেট'-এর নবীকরণ অর্থাৎ Renewal করাতে হবে।
২) প্রস্তাবে বলা হয় এবার থেকে সিনেমার তিনটি সার্টিফিকেট হবে তা হল  U/A, U/A7+, U/A13+ এবং U/A17+
৩) প্রস্তাবে এও বলা হয় সিনেমার Piracy দেখা হবে।
৪) ১৯৫২ সালের সিনেমাটোগ্রাফ আইনের সাব-সেকশন (১)এর ৬ নং ধারায় বলা হয়  কোনও সিনেমা প্রদর্শনের ছাড়পত্র পেয়ে গেলেও  ভারত সরকার সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে  নির্দেশ দিতে পারে পুনঃরায় সিনেমাটিকে পরীক্ষা করার।
১০০০  জন আর্টিস সরকারকে বিবেচনা করার প্রস্তাব দিয়েছে। দক্ষিণী অভিনেতা কমল হাসন সরাসরি এই আইনের বিরোধিতা করেছে।

Post a Comment

0 Comments