ফ্লুরাইড ও আয়রন মুক্ত বিশুদ্ধ জলের জন্য হাজির নয়া প্রযুক্তি

বেঙ্গল মিরর, কলকাতা: পানীয় জলে ফ্লুরাইড ও লোহার পরিমাণ বৃদ্ধির সমস্যা দিনে দিনে বাড়ছে। মানুষের শরীরে প্রচুর পরিমানে লোহা বা আয়রন থাকে যেগুলি বিভিন্ন জৈব-ক্রিয়া, বিশেষ করে অন্ত্রের কাজকর্মে সাহায্য করে। এছাড়াও শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতেও লোহার ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুসারে জলে ০.৩ পিপিএম-এর থেকে বেশি লোহা থাকলে আমাদের শরীরে যকৃৎ, হৃদপিন্ড ও স্নায়ুর নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। একইভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুসারে জলে ১.৫ পিপিএম-এর কম ফ্লুরাইড থাকা প্রয়োজন। ফ্লুরাইড মানুষের দাঁত এবং হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। কিন্তু শরীরে বেশি পরিমাণে ফ্লুরাইড ঢুকলে দাঁত এবং হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়। ভারতে ৬-৭ কোটি মানুষ জলে বেশি ফ্লুরাইড থাকায় নানান সমস্যার সম্মুখীন হন। পানীয় জল দফতরের একটি প্রতিবেদন অনুসারে গ্রামাঞ্চলে ১০ হাজার ৫০০র বেশি জনপদে মাটির নীচের জলে মাত্রাতিরিক্ত ফ্লুরাইড এবং লোহা পাওয়া যাচ্ছে। তাই কম খরচে ফ্লুরাইড এবং লোহাকে জল থেকে সরানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
Photo Credit: Aquapira

সিএসআইআর-সিএমইআরআই প্রথমবারের মতো মাটির নিচের থেকে পাওয়া জল থেকে লোহা এবং ফ্লুরাইড অপসরণের একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। পুরো প্রক্রিয়াটি স্বল্পমূল্যেই করা সম্ভব এবং বিপুল পরিমাণে জল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী অতিরিক্ত ফ্লুরাইড এবং লোহা এই পদ্ধতিতে সরানো যাবে।
জানা গিয়েছে, এই পদ্ধতিতে ৩টি বিশেষ ধরণের প্লাস্টিকের চেম্বার থাকবে। প্রথম চেম্বারে জারণ প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত লোহাকে সরিয়ে ফেলা হবে। এরজন্য অ্যালুমিনা ও ফেরাইট যৌগের সাহায্য নেওয়া হবে। দ্বিতীয় চেম্বারে লোহা মুক্ত করার ব্যবস্থা থাকছে। এরজন্য নুড়ি ও নির্দিষ্ট আয়তনের বালি রাখা থাকবে। তৃতীয় চেম্বার থেকে ফ্লুরাইড মুক্ত করা হবে। একাজে জিঙ্ক যুক্ত সক্রিয় চারকোলের ব্যবহার করা হবে। পুরো প্রক্রিয়ায় প্রতি ঘন্টায় ১০-১২ হাজার লিটার বিশুদ্ধ জল পাওয়া যাবে। যার ফলে অর্থেরও সাশ্রয় হবে।

Post a Comment

0 Comments