থ্রিল ও ভালোবাসার মেলবন্ধনে জমজমাট - পেইন্টিং ইন দ্য ডার্ক

বিনোদন ডেস্ক, বেঙ্গল মিররঃ সিনেমা হল অনেক বড় একটা বিনোদনের মাধ্যম। বাংলা সিনেমাতে প্রতিদিন নিত্য নতুন বিষয়ের আমদানি হচ্ছে। ছোট পর্দার নতুন নতুন জুটিরা সিনেমার মাধ্যমে আস্তে আস্তে বড়ো পর্দায় মূল চরিত্রে আবির্ভুত হচ্ছেন। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত এমনই একটা অসাধারণ ছবি পেইন্টিং ইন দ্য ডার্ক  
গল্প - এক মা আর অন্ধ ছেলের পবিত্র ভালোবাসার মেলবন্ধনের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলে ছবির মূল কান্ডারী। ইমানুয়েল এক অন্ধ চিত্রকর যে না দেখে ছবি আঁকে। সংসারের এক টানাটানি অবস্থা। মায়ের একমাত্র সম্পত্তি বলতে একমাত্র ছেলে ইমানুয়েল। কিন্তু জীবনে আসে এক অন্য স্রোত। জীবনের রং হারিয়ে যায় ইমানুয়েল মায়ের থেকে। মা ও ইমানুয়েল হয়ে পরে আলাদা। সেই থেকে গল্পের টানটান ধারাবাহিকতা বইতে থাকে। অন্যদিকে ইমানুয়েল এর জীবনে আসে এক ভালোবাসার মানুষ, বন্ধু জেরেল। এই ভাবে এগিয়ে যায় গল্পের মূলস্রোত৷ কিন্তু অবশেষে কি মা ও ছেলের দেখা হবে? নাকি গল্পের ধারা নিয়ে যাবে তাদের কে অন্য ঠিকানায়? নাকি দুটি মানুষের জীবনে বয়ে আসবে অন্য কঠিন বাস্তব? এই সব কিছুর মেলবন্ধনের সৃষ্টি এই ছবি।
অভিনয় - প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা রাসেদ রাহেমান ও অভিনেত্রী সায়ন্তি চট্টোরাজ। গল্পে নতুন জুটি হিসাবে দুজনে খুব সুন্দর অভিনয়ের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। অভিনেতা রাসেদ রাহেমান অন্ধ চরিত্রে বেশ ভালো অভিনয় করেছে। সায়ন্তি চট্টোরাজ বেশ সাবলীল অভিনয় করেছেন। অভিনেত্রী শ্রীলা ত্রিপাটি মায়ের চরিত্রে বেশ পরিপাটি। অভিনেতা বিশ্বজিৎ ঘোষ স্যামুয়েল এর চরিত্রে ভালো অভিনয় করেছেন। কিন্তু উচ্চারণ টা আরো একটু সাবলীল হতে পারতো। বন্ধু রিয়ান এর চরিত্রে সুরজিৎ মাইতি এক মন কারার অভিনয়ের পরিচয় দেয়। এছাড়া অভিনেতা সাহেব হালদার একটি ছোট্টো চরিত্রে মানানসই। সব মিলিয়ে পরিচালক সত্যজিৎ দাস কাস্টিং এর ক্ষেত্রে সঠিক পরিচয় দিয়েছেন।
গান - ছবিতে তিনটি গান রয়েছে। একটি রোমান্টিক গান। একটি মা কে নিয়ে গান ও একটি ইংলিশ গান। গান গুলো বেশ ভালো। গতানুগতিক এর বাইরে নতুন কিছুর স্বাদ পাওয়া যায়। তবে দুটি গানের থেকে ইংলিশ গান টা আরো ভালো হতে পারতো সিনেমাটোগ্রাফি টা।
মিউজিক - ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করেছেন একজন নতুন মিউজিক পরিচালক। নতুন পরিচালক হিসাবে নিজের ভালো অভিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন।
সিনেমাটোগ্রাফি - ছবিতে কলকাতা ও শান্তিনিকেতনের বহু দৃশ্য দেখা গিয়েছে। বেশ কিছু ফ্রেম মন কারার মতো। ছবিতে নানা রং ও নানা পেন্টিং এর দৃশ্য দেখা গিয়েছে। যেগুলো সিনেমাটোগ্রাফার বেশ ভালোভাবে ফ্রেমবন্দী করেছেন।
পরিচালনা - সবশেষে আসা যাক পরিচালনার কথায়। প্রথম বলবো পরিচালক এর প্রথম ছবি হিসাবে হয়তো ধরা পরা টা অনেকের কাছে অক্ষমতার পরিচয় হবে। ছবির কিছু ফ্রেম দেখলে বোঝা যাবে পরিচালক ছবি পরিচালনার দিকে বেশ হাত শক্ত করেছেন বেশ কিছু বছর ধরে। ছবিতে গান গুলোর প্রয়োগ খুব সুন্দর ভাবে করেছেন। ছবির থ্রিল ও ভালোবাসার মেলবন্ধন টা ধরে রাখতে তিনি সক্ষম। এছাড়া তিনি গল্পের শুরু ও শেষ এই মধ্যে সেতুবন্ধনে যথেষ্ট পারদর্শী সেটা এই ছবিতে পরিচয় দিয়েছেন।
থ্রিলার ছবির মতোই যদি ড্রামাতেও শেষ অবধি টানটান ব্যাপারটা না থাকে, তাহলে ছবি দেখার সেই মজাটা থাকে না। পরিচালক মহাশয় তাঁরই লেখা গল্পে কিন্তু সেই ব্যাপারটা ধরে রাখতে পুরোপুরি সক্ষম হয়েছেন। 
প্রযোজক, পরিচালক, নায়ক-নায়িকা পুরো টিমটাই তরুণ ও সম্ভাবনাময়। অন্তর্নিহিত আবেগ মনকে ছুঁয়ে যাবেই।
কার্টেসি - ফিল্মি গসিপ ডট কম 

Post a Comment

0 Comments