আহতকে বাঁচাতে গিয়ে 'সেট' পরীক্ষায় বসা হল না যুবকের, নেট দুনিয়ায় কুর্নিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল মিররঃ কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর কবিতায় আছে-
"তাইতো আমি বলি আরতির থালা
আর তসবির মালা
আসিবেনা কোন কাজে,
মানুষের সেবা মানুষ করিবে
আর সব কিছু বাজে ।
যেথায় মানবতার পরাজয়
সেথায় কাজ হইবেনা তর নামাজ পুজোয়।

প্রভু চাহিয়া রহিয়াছে
যাহারা মানবতার ধ্বংস না করিয়া রোধ
বেআক্কেল এর মত প্রার্থনায় মত্ত সে মহা নির্বোধ।"

হ্যাঁ, ক্ষীয়মান পরহিতব্রতের মাঝেও কিছু কিছু উজ্জ্বল মুখ সমাজকে দিশা দেখাতে পারে। তাদেরই একজন ওলিদ আলি।

জানা গিয়েছে, এই যুবক কলেজ সার্ভিস কমিশনের সেট পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় মেছেদার কাছে বাইকের ধাক্কায় রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে দেখেন এক বয়স্ক ব্যক্তিকে। পথচারীরা অনেকেই ছিলেন। কিন্তু যদি মারা যান! পুলিশি জেরার ঝক্কি পোহাতে হবে, এই ভয়ে কেউ সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেনি। পুলিশ কে ফোন করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু নিজের পরীক্ষা থাকা সত্বেও ততক্ষণাত বয়স্ক আহত মানুষটিকে কোলে কোরে প্রায় এক কিলোমিটার বেশকিছু পথ পায়ে হেঁটে ‘পপুলার নার্সিংহোমে’ ভর্তি করান ওলিদ। তারপর সেখান থেকে যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে যান তখন ইতিমধ্যেই ফুরিয়ে গিয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করার নির্দিষ্ট সময়। ফলে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি। ঘটনার বিবরণ সহ অনেক বলাবলির পরেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ বা পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার সুযোগ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। গতকালের ঘটনা। পরীক্ষায় বসতে পারেননি তার জন্য অবশ্য বিন্দুমাত্র কোন আপোশ নেই ওলিদের। তাঁর কথায়, একজন দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে আমার। আমি ওই বৃদ্ধকে কোলে নিয়ে নার্সিংহোমে পৌঁছই। মানুষের পাশে থাকার যে শিক্ষা পেয়েছি, সেইমতো কাজ করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’
এদিকে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় আগত বৃদ্ধের নাম শেখ নুরুজ্জামাল। তাঁর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহত ব্যক্তিকে যথাসময়ে নার্সিংহোমে না আনা হলে বৃদ্ধকে বাঁচানো কঠিন হত। এমনই একটি ঘটনার খবর নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে রীতিমত। এত প্রশংসার পরেও ওলিদ কান দিতে নারাজ। কিছুই তো করতে পারিনি, শুধু মানুষ হিসাবে একজন মানুষের কর্তব্য পালন করেছি মাত্র।

Post a Comment

2 Comments