নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল মিরর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দেশে কোথায় ডিটেনশন ক্যাম্প নেই। তখনই অসমে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি অবস্থায় নিহতের মা প্রশ্ন করেছিলেন, আমার ছেলে তবে মরল কোথায়? সে কথা থাক। এবার শহর কলকাতার ব্যস্ততম এলাকা খোদ বইপাড়াতেই ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি হল। হ্যাঁ, সোমবার ডিটেনশন ক্যাম্পের রেপ্লিকা নিয়ে প্রতিবাদে গর্জে উঠল শহর কলকাতার ছাত্র সমাজ। দাবি, সংবিধান অমান্যকারী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিল করতেই হবে।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi9kCZorXkiXl-kmG_X8Nn_m_Io4zbUYyqtMrRC-7oIHBjtj20xaQw9XmSmBjiy5IJkK3-StwdtJBwWE5unl28ZIKqvYnWyRgEHLBrTh1ivI8HtsGN27bd64VKQreuIOJ1QmvJ4fQQSRlg/s320/IMG-20191230-WA0001_1577729849535.jpg) |
ছবি: সন্দীপ সাহা |
প্রসঙ্গত, অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি করার সময় বলা হয়েছিল, ভূমিপুত্রদের ভয়ের কোনও কারণ নেই। কিন্তু এনআরসি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হতেই দেখা গেল 19 লাখ মানুষ রাতারাতি অনাগরিক হয়ে গেলেন। শুধু তাই নয়, অসমে এখন বহু মানুষ ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি। ফলে এনআরসির পক্ষে বিজেপি মানুষকে যতই আশ্বস্ত করার চেষ্টা করুক মানুষ যে রীতিমতো আতঙ্ক এবং ভয়ে রয়েছেন তা বোঝা গেল সোমবারের মিছিলে।
এদিন সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর বিরোধী মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এদিন বেলা দুটোর দিকে কলকাতার কলেজ স্কোয়ার থেকে নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোড হয়ে রানী রাসমণি পর্যন্ত একটি মিছিল হয় এবং সেখানে সমাবেশ হয়। মিছিলে অংশ নেন কলকাতা, বারাসাত, প্রেসিডেন্সি, আলিয়া ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়ারা। সমাজকর্মী জিম নাওয়াজ, সুজাউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক শামীম আহমেদ, আইনজীবী তৌসিফ আহমেদ প্রমুখ।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEixwErJm37MJYDVcK537cklbTbADW_0rp9wwqTSMa-GKerD7iyuDC9x9GofCQyipLbvLTzxsy57HGjGh13VdspmGaioQiU0vrm1y1CHWrbhTGyziVo6h1-Y2A9SaR61TmUd_W2ksMKiCpk/s320/IMG-20191230-WA0002_1577729849591.jpg) |
ছবি: সৌভিক পাল |
মিছিলে নকল ডিটেনশন ক্যাম্প নিয়ে হাঁটেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। দেখানো হয় অসমে ডিটেনশন ক্যাম্পে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পথযাত্রী সহ-নাগরিকদের অসহায় অবস্থার প্রতিচ্ছবিও। বন্দিসাজে সজ্জিত কারিমুল আমিন, তারিকুল ইসলামদের কথায়, মানুষ দেখুক কিভাবে অসমের বাঙালিরা বন্দি অবস্থায় যন্ত্রণার মধ্যে দিনানিপাত করছেন। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে বারাসাত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ইমরান আলী বা ওসমান গণিদের বক্তব্য, আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে বিশ্বাস করি না। ওঁরা মানুষের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছেন। অসম বলা হয়েছিল কোনও সমস্যা নেই অথচ 19 লাখ মানুষকে বিদেশি ঘোষণা করে নিজদেশে পরবাসী করে দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, অবিলম্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিল করতে হবে। সারাদেশে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির পরিকল্পনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। উত্তরপ্রদেশ জুড়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে বলেও অভিযোগ করা হয়। তাও বন্ধ করতে হবে বলে দাবি জানান। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গেলে তাদের উপর পুলিশি নির্যাতন হয়েছে এবং সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ বরখাস্ত করতে হবে। কোন রকম বৈষম্য ছাড়াই নাগরিকত্ব আইনের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দিতে হবে। ধর্মীয় বিভাজন কোন মতেই মেনে নেওয়া যাবে না এমন কথাও বলেন আন্দোলনকারী নিয়াজুদ্দিন হুসাইনি সহ অন্যান্যরা।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjDs0UMzSR-QfLXyXTVsUHIPgsZk0nWH29aasQ_AeY4O5TSmFXEKuP6AwdDz2C8mOPd6kxsaY1PoHs92jhgj2crBhl-57SvnDokONiI9MoNCm1KQtN2nfWPS_32TYaoc7V9SQ1yJ0DDRjw/s320/IMG-20191230-WA0000.jpg) |
পথে মেয়েরা। ছবি: নিজস্ব |
0 Comments