লাভ জেহাদের মিথ্যা অজুহাতে বলি মালদহের শ্রমিক, জ্যান্ত পুড়িয়ে মারল

দি বেঙ্গল মিরর ডেস্ক, কলকাতাঃ ভিন্ন ধর্মে  প্রেমর জন্য প্রাণ দিতে হল এক যুবককে। জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি ও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে রাজস্থানের উদয়পুরের রাজসমন্দ -জেলায় একটি র্নিদোষ মুসলিমকে নির্মমভাবে হত্যার দৃশ্য। ৫০ বছর বয়স্ক সেই মুসলিম পৌঢ়ের হত্যার দৃশ্য ভিডিও রেকর্ডিং করা হয় এবং দায় স্বীকার করে হুমকি দেওয়া হয়। Network-18 (IBN-7) এর ইংরেজী ওয়েবসাইট অনুযায়ী আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার অধিবাসী ‘মোহম্মদ আফরজুল শেখ’ নামক জনৈক মজদুর রাজস্থানের রাজসমন্দে নিজের পরিবারকে নিয়ে থাকতেন এবং মজদুরি করে দিনযাপন করতেন। হত্যাকারী ‘শম্ভুলাল রেগর’ তাকে কাজ দেওয়ার বাহানায় নিয়ে এসে নির্মমভাবে হত্যা করে। গো-রক্ষা, তিন তালাক, পদ্মাবতী ছবির পর দেশে সবচেয়ে বেশি আলোচ্য বিষয় এখন এই লাভ জেহাদ। প্রতিনিয়তই খবরের শিরোনামে কোনও কোনও ঘটনা। লাভ জেহাদের নামে ভিনধর্মের তরুণ-তরুণীকে মারধর, হেনস্তা এখন দৈনন্দিন ব্যাপার। কিন্তু কাউকে এমন নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা বোধহয় এই প্রথম। জানা গিয়েছে, রাজসমন্দ জেলার মহম্মদ আফরাজুল নামে এক শ্রমিককে তুলে নিয়ে আসে ওই অভিযুক্ত এবং তার সঙ্গীরা। পশ্চিমবঙ্গের মালদার বাসিন্দা ওই শ্রমিক কর্মসূত্রে রাজস্থানে গিয়েছিলেন। ভিডিওতে দেখা যায়, ঠিকা শ্রমিক আফরাজুলকে প্রথমে তাড়া করে শম্ভুলাল। তারপর তাঁকে দা দিয়ে কোপায় সে। প্রাণভিক্ষা করেও কোনও লাভ হয় না আফরাজুলের। একসময়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে মাটিতে ফেলে রেখে শম্ভু ভিডিওয় হুমকি দেয়, লাভ জেহাদের পরিণাম এমনই হবে। হুঁশিয়ারি দেয়, কথা না শুনলে এইভাবেই খুন করা হবে। এরপরই আফরাজুলের শরীরে অগ্নিসংযোগ করে শম্ভু।
পুলিশে জানিয়েছে, আফরাজুলকে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে শম্ভু। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিল, খুন করা। ভিডিওয় এক তরুণীর উপস্থিতি জল্পনা বাড়িয়েছে। অনুমান, অভিযুক্তর বোনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল নিহতর। তাই আক্রোশবশত এই খুনের ঘটনা। যদিও লাভ জেহাদের অভিযোগ মানতে নারাজ আফরাজুলের পরিবারের। মালদায় তাঁর গ্রামে শোকের ছায়া। ঘটনা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আধপোড়া দেহ এবং একটি দা ও স্কুটার উদ্ধার করেছে। মোবাইল থেকে যে ভিডিও করছিল সেই ব্যক্তির খোঁজে পুলিশ।
একজন মজদুর যে মজদুরি করেই তার দিনযাপন করে তাকে এতো নির্মমভাবে হত্যা করার কারণ হলো- সে শুধু মুসলিম! এটা কি সমাজের জন্য লজ্জাজনক নয়? প্রশ্ন তুলেছেন দেশের তাবড় তাবড় সমাজকর্মী। অনেকেই বলছেন, হিন্দু-মুসলিম, জাত-পাত-শ্রেণীর উর্দ্ধে উঠে আমাদের কি এমন নির্মম ঘটনার জন্য সোচ্চার হওয়া উচিত নয়?? মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, এই হত্যা ঘোষণা করছে এই দেশে আইন-কানুন বলে কিছু কী নেই?

Post a Comment

0 Comments