সুন্দরবনের সর্বহারাদের পাশে পূর্বাশা ইকো হেল্পলাইন সোসাইটি

বিশেষ সংবাদদাতা, দি বেঙ্গল মিরর, দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ গতকাল ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৭ দঃ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় স্বেচ্ছাসেবী পূর্বাশা ইকো হেল্পলাইন সোসাইটি, ভূগোল ও পরিবেশ, আলাপন ও জেনেক্স গোষ্ঠীর যৌথ উদ্যোগে একটি 'কম্বল ও শাড়ী বিতরণ' শিবিরের আয়োজন করে । সেই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পোশাক, পাঠ্যপুস্তক, খাতা, কলমসহ বিভিন্ন পড়াশুনার সামগ্রী।

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিনপূর্বের একেবারে শেষতম গ্রাম সাতজেলিয়া দ্বীপের এই চরঘেরি ।এককালে মরিচঝাঁপির উল্টোদিকের এই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ মানুষ বাঘের হাতে প্রাণ হারান। বাকিটা ২০০৯ সালের আয়লাতে রিক্ত করে দেয় প্রায় প্রতিটি পরিবারকে। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা শিক্ষক উমাশঙ্কর মণ্ডলের কথায়, 'আয়লায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী কে শিখন সামগ্রী, ৭০ টি পরিবার কে কম্বল ও ২৭ জন বিধবার হাতে শাড়ী তুলে দেওয়া হয় ঐ অনুষ্ঠানে।' জেনেক্স- এর পক্ষ থেকে গ্রামীন শিশুদের কম্পিউটার শিক্ষা প্রসারে একটি কম্পিউটার প্রদান করা হয় পূর্বাশার লাইব্রেরীতে। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র উমাশঙ্কর মণ্ডলের নেতৃত্বে গত ৮ বছর এই কর্মকাণ্ড প্রচারের আলো ছাড়াই চলে আসছে। এ পর্যন্ত চরঘেরী সহ শান্তিগাছি, পরশমনি ও বিধান কলোনীর মোট ৩৬০০ জন এই সুবিধা পেয়েছেন। উক্ত অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিশিষ্ট  বিজ্ঞানী ও বিশ্বভারতীর অধ্যাপক ড. মলয় মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপিকা সুতপা মুখোপাধ্যায়, রায়দীঘি কলেজের ভূগোল বিভাগীয় অধ্যাপক সনৎকুমার পুরকাইত সহ বিশিষ্ট গবেষকবৃন্দ।  উক্ত অনুষ্ঠানে সুন্দরবনের পরিবেশ ও জীবনযাত্রা নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনার ও শেষে চরঘেরীর চরে বৃক্ষরোপন করা হয়। ড. মুখোপাধ্যায় সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার ও দূষণ নিয়ে তাঁর সুচিন্তিত বক্তব্য রাখেন। বলাই বাহুল্য, এই সোসাইটি কেবল ব্যক্তিগত উদ্যোগে গত আট বছরে প্রায় দশ একর জমিতে চার লক্ষাধিক ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ রোপন করে সুন্দরবনে পরিবেশ সচেতনতায় এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে পাশাপাশি বিরল প্রজাতির রাজকাঁকড়া সংরক্ষনেও বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে পূর্বাশা সোসাইটি। মিঃ উমাশঙ্কর মণ্ডল সুন্দরবনের পরিবেশ ও তার অবৈজ্ঞানিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ গবেষক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন।

Post a Comment

0 Comments