আসিফ রেজা আনসারী
পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২ রাজ্য বা কেন্দ্রশাষিত অঞ্চলে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর হচ্ছে। জানা গিয়েছে, নির্বাচন কমিশন ঠিক করেছে প্রত্যেক ভোটারকে ২০০২ সালে নিজের বা নিজের আত্মীয় যেমন- বাবা-মা, দাদা, ঠাকুরদা বা ঠাকুমার নাম থাকতে হবে। এটা না হলেই ইআরও বেশকিছু নথি নিয়ে শুনানির জন্য সংশ্লিষ্ট ভোটারকে ডাকতে পারে। জন্মতারিখ বা জন্মস্থানের প্রমাণ দিতে হবে ভোটারকে। অন্যথায় ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারেন সেই নির্বাচক। এই নিয়ে এবার বিতর্ক উসকে দিল নাগরিক সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ’। সংস্থার তরফে শুক্রবার দাবি করা হয়, একটি আরটিআই-এ জানা গিয়েছে কমিশন যতোই দাবি করুন না কেন, পূর্বের নিয়ম মানছে না খোদ কমিশন। আগে কোনও নথি চাওয়া হয়নি। এবারই প্রথম ভোটারের কাছে ‘কাগজ’ চাওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কমিশন সবরকম নিয়মকে পালটে নতুন কিছু করেছে, যাতে ভোটারদের হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ-এর রাজ্য আহ্বায়ক মানবাধিকারকর্মী ড. উজ্জয়িনী হালিম জানান, আহমদাবাদের অধিকারকর্মী সন্তো¡ সিং মোহন সিং রাঠোরের আরটিআই-এর ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, নির্বাচন কমিশন নিজেই পূর্বের সব নিয়ম মানছে না। জানা গিয়েছে, আরটিআইয়ের তথ্যে স্পষ্ট হয়েছে ২০০২ সালের নিবিড় সংশোধনী বা এসআর শুরু হয়েছিল ২০০১ সালের আগস্ট মাসে, আর তা শেষ হয় ২০০২ সালের জানুয়ারি মাসে। এইসময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা হয়, এখানে পূর্ববর্তী সংশোধনী (১৯৯৫)-র তথ্য প্রদান করতে হয়নি। শুধু তাই নয়, ২০০২ সালে ভোটারদের কোনও ফরম পূরণ করতে হয়নি।
আরও জানা গিয়েছে, যাদের নাম ভোটার তালিকায় ছিল তাদের থেকে কোনও প্রমাণপত্র চাওয়া হয়নি। নতুন ভোটারের নাম তালিকায় তোলার জন্য গ্যাস বা টেলিফোনের সংযোগ, ডাক বিভাগ কর্তৃক বিতরিত চিঠি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-এর পাসবই, পাসপোর্ট ইত্যাদির কিছু দিলেই হতো। মৃত বা স্থানান্তর ছাড়া তালিকা থেকে কোনও নাম বাদ দেওয়া যেত না। আরটিআই-এ আরও জানা গিয়েছে যে, নাম ঠিকানা বা অন্য তথ্য সংশোধন পরিবারের প্রধানের উপস্থিতিতেই এনুমারেটর কর্তৃক নথিভুক্ত কতা হতো। বিএলও-র পরিবর্তে এনুমারেটর নিয়োজিত ছিলেন। এখানেই শেষ নয়, সমস্ত সংশোধন কার্বন কপিতে লিপিবদ্ধ করা হতো এবং একটি কপি পরিবারের প্রধানকে প্রদান করা হতো।

0 Comments