বেঙ্গল মিরর, কলকাতা: বঞ্চিত ও প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় উন্নতমানের চক্ষু-পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে পূর্ব ভারতের প্রথম মোবাইল ভিশন ভ্যান আউটরিচ ক্যাম্প সফলভাবে চালু করল শঙ্কর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট। এই অগ্রণী উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ–২ ডা. অনুপম ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কগনিজ্যান্ট-এর প্রতিনিধিরা এবং শঙ্কর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউটের শীর্ষ নেতৃত্ব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ সাজিদ হুসেন, স্ট্র্যাটেজিক বিজনেস ইউনিট হেড ও কলকাতা কোর কমিটি হেড, কগনিজ্যান্ট; সৈয়দ তানভীর হুসেন, সিনিয়র ম্যানেজার ও কলকাতা কোর কমিটি সদস্য, কগনিজ্যান্ট; মৃণাল শর্মা, সিনিয়র ডিরেক্টর – আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার, কগনিজ্যান্ট; এবং ডা. শিবাশিস দাস, ডিরেক্টর, শঙ্কর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট।
ইনস্টিটিউটের দীর্ঘদিনের ‘সাইট4অল’ মিশনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, মোবাইল ভিশন ভ্যান আউটরিচ প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য হল অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে চক্ষু-পরিষেবার প্রবেশাধিকারে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতি দূর করা। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিনামূল্যে তাৎক্ষণিক দৃষ্টি পরীক্ষা, উন্নত ডায়াগনস্টিক পরিষেবা এবং চক্ষু-স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সচেতনতা প্রদান করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণ ও সময়মতো চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব রোধে শঙ্কর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউটের অঙ্গীকারকে এই উদ্যোগ আরও দৃঢ় করে।
কগনিজ্যান্ট ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এবং শঙ্কর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউটের বাস্তবায়নে, মোবাইল ভিশন ভ্যানটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এর আর্বান প্রাইমারি হেলথ সেন্টার থেকে এবং বর্তমানে তা বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার বিভিন্ন প্রাইমারি হেলথ সেন্টারে সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত মেডিক্যাল টিম গ্রাম থেকে গ্রামে পৌঁছে নিশ্চিত করছেন, যাতে যাঁদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তাঁদের কাছে উন্নত তৃতীয় স্তরের চক্ষু-পরিষেবা পৌঁছায়।
এই ভ্যানে রয়েছে অত্যাধুনিক ডায়াগনস্টিক প্রযুক্তি—রেটিনাল ইমেজিং মেশিন, নন-কন্ট্যাক্ট টোনোমিটার এবং ডিজিটাল অটো-রিফ্র্যাক্টোমিটার। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, গ্লুকোমা এবং অন্যান্য রেটিনা-সংক্রান্ত রোগ দ্রুত, ব্যথাহীন ও নির্ভুল পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই উপলক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডা. শিবাশিস দাস, ডিরেক্টর, শঙ্কর জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট বলেন, “মোবাইল ভিশন ভ্যান অন্তর্ভুক্তিমূলক চক্ষু-পরিষেবার পথে এক শক্তিশালী পদক্ষেপ। উন্নত ডায়াগনস্টিক পরিষেবাকে সরাসরি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আমরা প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্বের মূল সমস্যায় আঘাত করছি এবং স্থান বা আর্থিক সীমাবদ্ধতা নির্বিশেষে সকলের জন্য মানসম্মত চক্ষু-পরিষেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।”
কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, “এই উদ্যোগ কমিউনিটি হেলথকেয়ারে এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। মোবাইল ভিশন ভ্যান দেখিয়ে দিল কীভাবে প্রযুক্তি, অংশীদারিত্ব এবং মানবিকতার সমন্বয়ে বিশেষত দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য বাস্তব ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।”

0 Comments