সামশেরগঞ্জ: ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তবুও প্রশ্ন থেকেই যায়?

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: মুর্শিদাবাদে সামশেরগঞ্জে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে খুনের ঘটনায় ১৩জন দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করল আদালত। জঙ্গিপুর মহকুমা আদালত এই রায় দিয়েছে। গত ১২ এপ্রিল বাবা হরগোবিন্দ দাস ও ছেলে চন্দন দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এই ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় গোটা রাজ্যে। বিজেপি ওআরএসএস-এর লোকজন এটা নিয়ে রাজনীতি শুরু করে। তবে পুলিশ প্রথম থেকে জানিয়ে এসেছে, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এই খুন হয়েছে। রাজনৈতিক বা অন্য কোনও কারণ নেই। চার্জশিটেও তা উল্লেখ করেছিল পুলিশ।

এ দিকে হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সিট গঠন করে জেলা পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর শুরু হয় বিচারপ্রক্রিয়া। ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ পর্যন্ত শুনানি চলে। সোমবার বিচারক অমিতাভ মুখোপাধ্যায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। 

জানা গিয়েছে, একাধিক সাক্ষী, ফরেনসিক রিপোর্ট, পুলিশি তদন্ত রিপোর্ট এবং অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানায়। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন আদালতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য উঠে আসে, যা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় বলে মনে করা হচ্ছে।

পুলিশের তদন্তে উঠে আসে যে, অভিযুক্তরা বাড়ির দরজা ভেঙে বাবা-ছেলেকে টেনে বের করে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করে। চার্জশিটে ৯৮৩ পৃষ্ঠার বিস্তারিত বিবরণে এই নৃশংসতার ছবি ফুটে ওঠে। রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি) ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেয়, যাদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। মোট ৩৮ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে দীর্ঘ শুনানির পর জঙ্গিপুর আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ওই ১৩ জনকে। এ দিন রায় ঘোষণার দিন থাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল জঙ্গিপুর আদালত চত্বরে। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ধৃতদের নিয়ে আসা হয় আদালতে। ধৃতদের দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক অমিতাভ মুখার্জি।তারপর রায় শোনান। 

এ দিকে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন যে আসানসোলে ইমাম পুত্রকে হত্যার ঘটনায় কেন বিচার হবে না। খোদ তৎকালীন বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়র নামে উসকানির অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও বাবুল সুপ্রিয় বর্তমানে তৃণমূলের নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী। বাবুল সুপ্রিয় সেইসময় তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য রাখেন। 

Post a Comment

0 Comments