ওয়াকফ: কেন্দ্র জমি মাফিয়া, রাজ্য প্রতারণা করছে, বিস্ফোরক শুভঙ্কর

আসিফ রেজা আনসারী

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জমি মাফিয়া। তারা মন্দির মসজিদ সবকিছুর জমিই হাতিয়ে নেবে। নয়া ওয়াকফ আইনের মাধ্যমে তাই জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। আম্বানিদের হাতে জমি তুলে দেওয়া হবে। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই মন্তব্য করেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুসলিমদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। এ দিন বিকালে দলের রাজ্য দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আশুতোষ চ্যাটার্জি, রোহন মিত্র, মিতা চ্যাটার্জি ও অজিতেশ পান্ডে। 

টিবিএম গ্রাফিক্স

এ দিন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের কিছু বক্তব্য ও কাজে সংখ্যালঘু মানুষজন ওয়াকফ সম্পত্তি উমিদ পোর্টালে নথিভুক্ত করেননি। রাজ্যে আইন লাগু হবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্থ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, 'স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদের সূতিতে এসে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, এ রাজ্যে নয়া সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকর করতে দেওয়া হবেনা, সংখ্যালঘু মুসলিম সমাজ মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়েছিলেন। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চুপিসারে কেন্দ্রের নয়া সংশোধিত ওয়াকফ আইনকে মেনে নিয়ে ওয়াকাফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণ নির্দিষ্ট সময়ের (৫ ডিসেম্বর'২৫) মধ্যে পোর্টালে আপলোড করানোর কাজে অগ্রসর হচ্ছেন।' কংগ্রেস নেতা জানান, রাজ্যে ৮০ হাজারের বেশি ওয়াকফ সম্পত্তির মাত্র ১০ শতাংশ নথিভুক্তিকরণ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই কাজ কিছুতেই হবে না। 

প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শুভঙ্কর সরকার কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে দাবি করেন,  উমিদ পোর্টালে ওয়াকফ সম্পত্তির তথ্য আপলোডের সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রয়োজন হলে রাজ্য সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট বা কেন্দ্রের কাছে আবেদন করতে হবে। দখল হয়ে যাওয়া ওয়াকফ সম্পত্তিগুলো রাজ্য সরকারকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। অনেক ওয়াকফ সম্পতি স্বাধীনতার পূর্ব থেকে আছে যাদের নির্দিষ্ট কোনও কাগজ নেই সেগুলোকে দাগ খতিয়ান নম্বর ধড়ে রেজিস্ট্রেশন করে দিতে হবে, এগুলিকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে সিজ করা চলবে না। তিনি আরও দাবি করেন, ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তির সঠিক মূল্যায়ন করে আয় ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে। রাজ্য সরকার ইমাম ও মুয়াজ্জিন ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে কত অর্থ খরচ করে তার হিসাব দিতে হবে।হিন্দু মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডে যেমন হিন্দু ছাড়া অন্য ধর্মের কাউকে রাখা হয় না, তেমনই ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য হিসাবে অমুসলিম রাখার উদ্যেশ্য সন্দেহজনক এবং অনৈতিক।বিজেপিশাসিত রাজ্যে কোন কোন বিজেপি নেতা ওয়াকফ সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছে, তা কেন্দ্রকে প্রকাশ করতে হবে। শিল্পপতি আম্বানিদের বিলাসবহুল বাড়ি ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর, সেই বাড়ির তথ্য জনসমক্ষে আনুক মোদি সরকার। এছাড়াও অবিলম্বে ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভুক্তিকরণ নিয়ে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের লক্ষে মুসলিম সমাজের প্রতিনিধি, ওয়াকফ সম্পত্তির উত্তরাধিকারীদের প্রতিনিধি এবং সমস্ত স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করতে হবে বলেও জোরালো দাবি জানান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।

Post a Comment

0 Comments