সংখ্যালঘু ও পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দাবিতে সরব জনজাগরণ মঞ্চ

আসিফ রেজা আনসারী

নানা অছিলায় বাংলাদেশ এবং ভারতের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোর উন্নতি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা সর্বোপরি পরিযায়ী শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি তুলল বাংলা জনজাগরণ মঞ্চ। রবিবার কলকাতা প্রেসক্লাবে এই সংগঠনের সাংবাদিক সম্মেলন ছিল। এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আলম, লেখিকা আয়েশা খাতুন, লেখক ও সমাজকর্মী সুমন সেনগুপ্ত, সমাজকর্মী অর্ধেন্দু বিশ্বাস, কানন চট্টোপাধ্যায়, অধ্যাপক দীপিকা দাস প্রমুখ। সবাই ভারত ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দাবি জানান। বাংলার শ্রমিকরা যাতে রাজ্যের মধ্যে কাজ পান সেই জন্য ভূমিপুত্র সংরক্ষণের দাবি তোলা হয়। 

এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যাপক নুরুল আমিন বলেন, আমাদের দেশে যা পরিস্থিতি তাতে সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে। শুধু সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু হিসেবে দেখলে হবে না, এই সামাজিক সমস্যা আমাদের মোকাবিলা করতেই হবে। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে আবহমানকাল ধরে সম্প্রীতি, সহাবস্থান ও সৌভ্রাতৃত্ব রয়েছে। ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্যে প্রভেদ থাকলেও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকতে ভালোবাসেন। এটাই দেশের শক্তি। কিন্তু কিছু বিভেদকারী রাজনৈতিক দল মানুষের মধ্যে ফাটল ধরাচ্ছে। সাধারণ মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক সমস্যাকে আড়াল করতে চাইছে। 

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সংগঠনের সদস্য ও বিশিষ্টরা

অন্যদিকে লেখিকা আয়েশা খাতুন দলিত ও পিছিয়ে পড়া হিন্দুদের মধ্যেও মুসলিমদের সম্পর্কে বিষ ঢেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেন। তার মতে পরস্পরকে বোঝা এবং সামাজিক মেলামেশার মাধ্যমে এটাকে মোকাবিলা করতে হবে। সুমন সেনগুপ্ত বলেন, আমাদের দেশে হিন্দু-মুসলমান মিলেমিশে থাকেন এটাই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে প্রত্যেক জায়গায় সংখ্যালঘুদের প্রতি নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে এটাও সত্যি। তিনি বলেন, বিজেপি বাছাই করা কিছু ঘটনা তুলে ধরে। বাংলাদেশের ঘটনায় বিচার দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের দেশেও সংখ্যালঘুদের ইনসাফ দিতে হবে, কিন্তু বিজেপি সেটা করছে না।

 অন্যদিকে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ও ভাতৃত্ববোধ বাড়ানোর উপর জোর দিতে বলেন কানন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, সবাইকে মানবধর্ম রক্ষা করতে হবে। পরস্পরকে জানা ও বোঝার মাধ্যমে বিদ্বেষপ্রচার রুখতে হবে। মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্র সমাজকর্মী অর্ধেন্দু বিশ্বাস বলেন, সাধারণ মানুষের সমস্যাকে গুরুত্ব না দিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদে আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে থাকি সে বিষয়টা কেউ তুলে ধরছে না। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে সামনে এনে পুরো জেলার ছবি খারাপ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অধ্যাপিকা দীপিকা দাস শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোর দিকে বেশি করে মনোনিবেশ করার কথা বলেন। 




Post a Comment

0 Comments