মদমুক্ত বাংলার দাবিতে ওয়েলফেয়ার পার্টির স্মারকলিপি

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: মদ সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে। তাই মদ-মুক্ত সমাজ তৈরির লক্ষ্যে সরকারের পদক্ষেপ দাবি করল ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া বা ডব্লিউপিআই। মঙ্গলবার দুপুরে এক্সাইজ দফতরের একটা স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন ওয়েলফেয়ার পার্টির রাজ্য কোষাধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন আহমেদ, রাজ্য সম্পাদিকা শাহজাদী পারভীন, রাজ্য কমিটির সদস্য যথাক্রমে মানোয়ারা বেগম ও সিরাজ শেখ সহ অন্যান্যরা।

এক বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, 'করোনা অতিমারীর সংকটকাল কাটিয়ে উঠে যখন সারা বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দেশও সার্বিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার লড়াই করছে, তখন আমাদের গর্বের বাংলার সমাজ জীবনকে ধ্বংসের মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে মদ নামক এক ধ্বংসাত্মক মারণ পানীয়। পরিতাপের হলেও সত্যি যে, রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলায় মানবতাকে আচ্ছন্নকারী এই বিষ পানীয়টিকে ক্ৰমে ক্ৰমে আরও সহজলভ্য করে দিয়ে রমরমিয়ে তার বিপণনের সকল আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতি বছরই রাজ্যের মদ থেকে রাজস্ব আদায় বেড়েই চলেছে এবং আগামীতে রাজ্য শুধু এই মদের রাজস্ব থেকে ২৫,০০০কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে । বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১.৪ কোটির বেশি জনতা মদ্যপানাসক্ত। লক-ডাউন পরবর্তী দুঃসময়ে সাধারণ শ্রমজীবি মানুষ রুটি-রুজির প্রশ্নে যখন জর্জরিত ও রাজ্যের বৃহত্তর ছাত্র-যুব সমাজ যখন শিক্ষা-কর্মসংস্থানের প্রশ্নে দিশাহীন, তখন স্বাভাবিকভাবেই সার্বিক হতাশা ও মানসিক যন্ত্রণার কারণে সমাজ ও পরিবারের মধ্যে কলহ-বিবাদ-অপরাধ প্রবণতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।


আরও বলা হয়েছে, মদ-মুক্ত সমাজ গড়ার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর আততায়ীদের হাতে শহিদ হন পার্টির মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ ব্লক-কোষাধ্যক্ষ হাজী আক্তার হোসেন । সেই অমর শহিদের স্মরণে আমরা প্রতি বছর ওই দিনটিতে বাংলাব্যাপী শহিদ দিবস ও মদ-বিরোধী দিবস পালনের কর্মসূচি নিয়ে থাকি। শান্তিপ্রিয় বঙ্গবাসীর পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি করা হয়েছে যে, নারী-শিশু ও সমাজের সৰ্বস্তরের মানুষের সার্বিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে মদ থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে এবং সুলভে দেশী ও বিলীতি মদ বিপণনের রাজ্য আবগারি দপ্তরের সকল সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মদ ভিত্তিক অর্থনীতি নয়, বরং জনকল্যাণমূলক প্রগতিশীল অর্থনীতির স্বার্থে দুধের মতো পুষ্টিকর, সুষম আহার বা খাদ্যপণ্যকে সুলভে বিপণনের উদ্যোগ বেশী বেশী করে রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। মদ-ভিত্তিক অর্থনীতির সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে রাজ্য আবগারি আইনে বারংবার সংশোধন আনা চলবে না। সমস্ত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-সরকারী অফিস-আদালত-হাসপাতাল ও জাতীয় সড়কের ধারে গড়ে ওঠা লাইসেন্স প্রাপ্ত মদের দোকানগুলিকে অবিলম্বে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়ার নোটিশ দিতে হবে। পানমশলা ও গুঠকার মতো হানিকারক তামাকজাত পণ্য নিষিদ্ধ করণের পাশাপাশি আপামর রাজ্যবাসীর সুখ-শান্তি-সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে অবিলম্বে রাজ্য থেকে মদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মদ-মুক্ত বাংলা গড়ার উদ্যোগ নিতে হবে।

Post a Comment

0 Comments