আসিফ রেজা আনসারী
কোথাও পুর-প্রশাসনের নজর এড়িয়ে, কোথাওবা স্থানীয় পুর-প্রতিনিধি বা পুলিশ-প্রশাসনকে হাত করে শহর কলকাতায় অনেক বেআইনি ফ্ল্যাট গড়ে উঠছে। এর জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তোলাবাজি করছে, প্রশাসন মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে, এমনকী বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। মানুষজন বলছেন, শহর কলকাতায় স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুলিশ টাকা খেয়ে অনেক জায়গায় অনুমোদিত অংশের থেকে বেশি তলা নির্মাণ করতে দিচ্ছে। অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে প্ল্যান অনুমোদন ছাড়াই বাড়ি নির্মাণ করা হয়। সাধারণ মানুষ না বুঝে সেই বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনছেন। এরাই আবার প্রতারণার শিকার হন। সম্প্রতি রাজাবাজার এলাকায় এমনই সমস্যায় পড়েছেন বেশ কিছু বাসিন্দা। কমবেশি ৫০টি পরিবার এখন ছাদহীন হয়ে পড়েছেন। সবার দাবি, মানবিকভাবে বিষয়টি সমাধান করা হোক। শনিবার এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। একইসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেদের বক্তব্যও তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন সমাজকর্মী উমার ওয়াইস, জাভেদ আলি প্রমুখ।
সাংবাদিকদের সামনে উমার ওয়াইস বলেন, নিয়ম না মেনে বাড়ি তৈরির সময়ই তা বন্ধ করতে হতো। সেটা করা হয়নি কারণ, সবাই টাকা খেয়ে বাড়ি তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে। এখন কেন দায় নেওয়া হবে না? প্রশ্ন তোলেন উমার ওয়াইস। তিনি আরও বলেন, বিল্ডিং তৈরির সময় নিয়ম না মেনে বা কোথাও এদিক-ওদিক হয়ে গেলে ফাইন দিয়ে সেই বিল্ডিংকে রেগুলার করা হোক। আমাদের দাবি, যেসব বাড়ি ইতিমধ্যেই নির্মিত হয়েছে, সেগুলির জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া হোক। আগামীতে যাতে বেআইনি বা অনুমোদনহীন বাড়ি না তৈরি হয় এবং কেউ না কেনেন, সেটার জন্য সচেতনতা তৈরি করতে কলকাতা পুরনিগমকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। মানবিকতার খাতিরে সবটা দেখার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে অনুরোধ করেন।এভাবে অনুরোধে প্রশাসন সাড়া দিলে ধরনা, পথ অবরোধ, এমনকী নবান্ন অভিযান হতে পারে বলেও হুমকি দেন তিনি।
![]() |
সাংবাদিক সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা |
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে উমার ওয়াইস বলেন, যোগীরাজ্যে যেভাবে বুলডোজার চলছে, একই কায়দায় কলকাতাতে বুলডোজার চালাচ্ছে প্রশাসন। সব ক্ষেত্রেই গরিব মানুষ ভুক্তভোগী।
![]() |
ডানদিকে কংগ্রেসনেতা আবদুল সালাম সিদ্দিকী |
একইভাবে এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সংখ্যালঘু শাখার চেয়ারম্যান শামীম আখতার। এক প্রশ্নে সংগঠনের মধ্য কলকাতা জেলা চেয়ারম্যান আবদুল সালাম সিদ্দিকী বলেন, কলকাতার মুসলিম এলাকায় অনেক বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। বাড়ি তৈরি হওয়ার পরে মানুষ যখন বসবাস শুরু করছেন, তখন বাড়ি ভাঙার কাজে হাত দিচ্ছে প্রশাসন। ফলে গরিব মুসলিমরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। আমাদের দাবি, সব ধরনের বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে যাতে মানুষ আর ক্ষতির মুখে না পড়ে। আর যেগুলি হয়ে গিয়েছে সেটার জন্য বিশেষ আইন এনে সেগুলিকে রেগুলার করা হোক।
0 Comments