'পার্থ সেনগুপ্ত: বহমান ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির প্রতিচ্ছবি', মত বিশিষ্টদের

আসিফ রেজা আনসারী

শুক্রবার বিশিষ্ট সমাজকর্মী, প্রাবন্ধিক ও সাক্ষরতা আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ পার্থ সেনগুপ্ত চতুর্থ স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান ছিল মৌলালি যুবকেন্দ্রে। এ দিন সন্ধ্যায় এই বিশেষ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম-এর সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান, রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি, আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. জাহাঙ্গীর আলি, সাবেক আমলা আরফান আলি বিশ্বাস, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইফুল্লাহ, অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, সংগঠনের নীলাদ্রি সেনগুপ্ত প্রমুখ।


স্বাগত ভাষণে আমজাদ হোসেন বলেন, নিরক্ষতা দূরীকরণের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পার্থ সেনগুপ্ত রাজ্যজুড়ে ছুটে বেড়াতেন। বই প্রকাশ, ইতিহাস নিয়ে গবেষণা ও ঐতিহ্য-রক্ষায় তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। অন্যদিকে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি তাঁর বক্তব্যের মধ্যে স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলিমদের অবদানের কথা উচ্চারণ করেন। ইতিহাসের পাঠ্য বইয়ে সে সমস্ত স্থান না পাওয়া এবং ইতিহাস সংরক্ষণে পার্থ সেনগুপ্তের অবদান নিয়ে তিনি আলোচনা করেন তিনি। নতুন প্রজন্ম বই পড়ার দিকে বেশি আগ্রহী হয় সেই আহ্বান জানান সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি। অনুষ্ঠানের সভাপতি আহমদ হাসান ইমরান উল্লেখ করেন, তিনি ছাত্রাবস্থায় যখন কারমাইকেল হস্টেলে থাকতেন তখন পার্থ সেনগুপ্তের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ গড়ে ওঠে। পরে মানিকতলা ফতেহ আলি ওয়েসির মাজার সংস্কার ও রক্ষার কাজে সহযোগী হন। মুসলিমদের ইতিহাস সংরক্ষণে পার্থ সেনগুপ্তের ভূমিকার কথা তিনি উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তাঁর যে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিল এবং নানান বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে তিনি যে ওয়াকিবহাল থাকতেন ও উদ্বিগ্ন হতেন, সেসব কথাও উঠে আসে আহমদ হাসান ইমরানের বক্তব্যে।

এই দিনের মূলবক্তা সাইফুল্লাহ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি মুসলিমদের অবদান নিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ভারতবর্ষে ইংরেজদের আগমন এবং স্বাধীনতার পর্ব পর্যন্ত বাঙালিদের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের নানান প্রেক্ষিত। তিনি বলেন, একটা সময় দেখা গিয়েছে বাঙালিদের খুব বেশি সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল না। অন্যদিকে সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক নিপীড়নের কারণে মুসলমানরা স্বাধীনতার সংগ্রামে সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি বলেও উল্লেখ করেন। স্বাধীনতার সংগ্রামে মুসলিমদের অবদান প্রসঙ্গে মজনু শাহ, ফকির বিদ্রোহ, তিতুমিরের বাঁশের কেল্লা, দুদু মিঞার নেতৃত্বে ফরাজি আন্দোলনের কথা উঠে আসে সাইফুল্লাহ-র বক্তব্যে।

অন্যান্যদের মধ্যে নিজেদের অভিজ্ঞতা, পার্থ সেনগুপ্তের স্মৃতি ইত্যাদি ভাগ করে নেন আরফান আলি বিশ্বাস, সোনা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। 

Post a Comment

0 Comments