অসামান্য অবদানের জন্য বিশিষ্টদের পুরস্কৃত করল লায়ন্স ক্লাব

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: বহু মানুষ আছেন যারা নিজেদের নিত্য নৈমিত্তিক জীবন-যাপনের পাশাপাশি সামাজিক ক্ষেত্রেও বড় অবদান রাখেন। এমনই বিশিষ্ট প্রয়োজনকে পুরস্কৃত করল লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল। কলকাতায় অনুষ্ঠিত এলসিওআই অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫-এ সমাজের পরিবর্তনশীলদের সম্মানিত করা হয়।

ছবি- জাহানারা খাতুন

এই বছরের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ১লা জুন ২০২৫, সন্ধ্যা ৬টা থেকে, আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গল, কলকাতায়।এই বিশেষ সন্ধ্যার অন্যতম আকর্ষণ ছিল নৃত্যশিল্পী ও সমাজকর্মী আলোকানন্দা রায়ের নৃত্যনাট্য “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য”। তাঁর প্রবর্তিত “ভালোবাসার থেরাপি” ও নৃত্য থেরাপির মাধ্যমে সমাজের প্রান্তিক মানুষ, বিশেষত কারাবন্দীদের পুনর্বাসনের যে কাজ তিনি করে চলেছেন, তারই একটি আবেগঘন উপস্থাপনা মঞ্চস্থ হয়। এই পরিবেশনা তুলে ধরে কিভাবে শিল্প এবং সহমর্মিতা সমাজকে বদলাতে পারে।এই বছরের সম্মানপ্রাপ্তদের তালিকায় ছিলেন এক ঝাঁক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও সংস্থা। সম্মানিত হন রুপার চেয়ারম্যান প্রহ্লাদ রাই আগরওয়াল, স্কিপার লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাজ্জন বানসল, (চেয়ারম্যান, এসআরএমবি'র ব্রিজমোহন বেরিওয়াল, পদ্মশ্রী সাজ্জন ভজনকা, গ্রান্ট থর্নটনের বিশেষ সাহেব, এনটিআর ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের উপাচার্য ড. পি. চন্দ্রশেখর, লুমিনো ইন্ডাস্ট্রিজের দীপক গোয়েল।এছাড়াও রয়েছেন রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ডিরেক্টর কিরণ খানিক, সেবির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ডি. আর. মেহতা, ইন্ডিয়ান রেড ক্রস সোসাইটির অজয় পটেল, শিল্পী আলোকানন্দা রায়, ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের মনীষা সাবু, সমাজসেবী এম. এম. সিংহি, কুলদীপ সিংহ, রামপাল সোনি প্রমুখ।

 বিশ্বের বৃহত্তম সেবামূলক ক্লাব সংস্থা লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল, যা ২০০টিরও বেশি দেশ ও ভৌগলিক অঞ্চলে বিস্তৃত, এর সদস্য সংখ্যা ১৪ লক্ষেরও বেশি। শুধু ভারতেই রয়েছে প্রায় ৮,৫০০টি লায়ন্স ক্লাব, যেগুলি সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিস্তৃত এবং যেগুলির মাধ্যমে প্রায় ২.৯ লক্ষ সদস্য সমাজসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে সফল হয়েও তাঁরা সমাজের উন্নয়নে আত্মনিবেদিত হয়েছেন। লায়ন্স ক্লাবের মূল মন্ত্র "আমরা সেবা করি"—এই নীতির ভিত্তিতেই তাঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করে চলেছেন। ভারতে লায়ন্স সদস্যরা দৃষ্টি সুরক্ষা, ডায়াবেটিস সচেতনতা, স্বাস্থ্যসেবা, দুর্যোগ মোকাবিলা ও পুনর্বাসন, পরিবেশ রক্ষা, নারী ও যুবশক্তির ক্ষমতায়ন, শিক্ষা এবং প্রয়োজনে অন্যান্য সমাজভিত্তিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। দেশে লায়ন্স ক্লাব পরিচালিত হয় ১৭৫টি চক্ষু হাসপাতাল, ৫০টি রক্তদান কেন্দ্র, ৫৫টি ডায়ালাইসিস ইউনিট, ২০০টিরও বেশি স্কুল ও শিশু উদ্যান। তাঁরা দৈনিক ভিত্তিতে দরিদ্রদের আহার প্রদান করেন, শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি চালু করেছেন, টিকাকরণ কেন্দ্র স্থাপন করেছেন এবং সমাজের প্রান্তিকদের জন্য বহু রকমের সহায়তা প্রদান করেন। লায়ন্স ক্লাবের এসব প্রকল্পে প্রতি বছর ভারতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়।

Post a Comment

0 Comments