আসিফ রেজা আনসারী
পূর্ব-কলকাতা জলাভূমি বিশ্বের অন্যতম ‘রামসর’ সাইট। এখানকার জীববৈচিত্র সংরক্ষণ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকেও নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু মানুষের অনিয়ন্ত্রিত চাহিদা ও একটা শ্রেণির লোভের কারণে ধ্বংসের মুখে পূর্ব-কলকাতা জলাভূমি। এ নিয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠান করল ‘দক্ষিণী প্রয়াস’ নামে একটি সংস্থা। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের বিনামূল্যে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এই সংস্থাটি ৩২ বছর আগে একটি গাছের নীচে যাত্রা শুরু করেছিল। সেই থেকে ধীরে ধীরে বড় আকার নিয়েছে। তারই ৩২ বছর পূর্তি উপলক্ষে কলকাতার আইসিসিআরের সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠান হয়। তাতে পূর্ব কলকাতা জলাভূমির গুরুত্ব তুলে ধরতে শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিবেশিত হয় একটি প্রাণবন্ত নৃত্যনাট্য।
এ দিনের অনুষ্ঠানের থিম ছিল ‘পূর্ব কলকাতা জলাভূমি: পরিবেশ ও অর্থনীতি’। কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কলকাতা শহর এবং বিশ্বের জন্য এই জলাভূমিগুলির তাৎপর্য সম্পর্কে নানান দিকে তুলে ধরা হয়। শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত নৃত্যনাট্য সুন্দরভাবে জলাভূমির সারমর্ম এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরে।
এ নিয়ে দক্ষিণী প্রয়াসের সভাপতি অনুভূতি প্রকাশ শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি সংগঠনের বৃদ্ধি এবং সম্প্রদায়ের উপর প্রভাবের উপর জোর দেন। এ দিনের প্রধান অতিথি বিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা শিক্ষাবিদ প্রফেসর শান্তনু রায় দক্ষিণী প্রয়াসের মাধ্যমে সামগ্রিক সম্প্রদায়ের উন্নয়নের অনন্য মডেলের প্রশংসা করেন।
প্রসঙ্গত, বিগত তিন দশকে ‘দক্ষিণী প্রয়াস’ একটি সমৃদ্ধশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৪০০ জন শিশুকে বিনামূল্যে সামগ্রিকমানের শিক্ষা প্রদান করছে সংস্থাটি। ৩৭জন শিক্ষক এবং ১৫জন অ-শিক্ষক কর্মীদের নিবেদিতপ্রাণ প্রচেষ্টায় সংস্থাটি শুধুমাত্র শিক্ষাগত উৎকর্ষের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে না বরং শিশুদের পরিবারকে একটি অনন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প এবং স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগও প্রদান করে। তারা মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে যা বিশ্বব্যাপী বিক্রি হয়, উদ্বৃত্ত আয় তাদের সন্তান এবং সম্প্রদায়ের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবায় পুনঃনিয়োগ করা হয়।
0 Comments