জৈন ধর্মের ঐতিহ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ, দেশজুড়ে পালিত হবে হেরিটেজ ডে

আসিফ রেজা আনসারী 

প্রাচীন ভারতবর্ষের ধর্ম, দর্শন এবং চিন্তার বিকাশের ক্ষেত্রে জৈন ধর্ম বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এই ধর্মের মূল মন্ত্র হলো বাঁচা এবং মানুষকে বাঁচতে দেওয়া। এই মন্ত্রকে ধারণ করা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছেন জৈন সম্প্রদায়ের মানুষজন। এবার শ্রী ভারতবর্ষীয় দিগম্বর জৈন তীর্থ সংরক্ষিণী মহাসভা 'জৈন ধরোহর দিবস' বা হেরিটেজ ডে পালন করবে। শুধু তাই নয়, শেঠি ট্রাস্ট শ্রী নির্মল কুমার জৈন শেঠির সম্মানে স্মারক পুরস্কারও ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। 

সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে শ্রী ভারতবর্ষীয় দিগম্বর জৈন তীর্থ সংরক্ষিণী মহাসভা একটি সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানেই জৈন সংস্কৃতি, স্মৃতিস্তম্ভ এবং উৎসবগুলির সংরক্ষণ ও প্রচারের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেঠি ট্রাস্টের ট্রাস্টি শ্রী ধর্মেন্দ্র জৈন, গুণায়তনের সভাপতি শ্রী বিনোদ কুমার কালা এবং শ্রী ভারতবর্ষীয় দিগম্বর জৈন তীর্থ সংরক্ষিণী মহাসভার সম্পাদক শ্রী রাজকুমার শেঠি সহ সম্মানিত সদস্যরা।

Photo by source 

সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৭ এপ্রিল দেশব্যাপী 'জৈন ধরোহর দিবস' পালন করা হবে। এই দিনটি শ্রদ্ধেয় নির্মল কুমার শেঠি জৈনের স্মৃতিতে উৎসর্গীকৃত। শ্রী শেঠি জৈন সম্প্রদায়ের একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব, জৈন ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং সামাজিক কল্যাণে অবদান রাখার জন্য তার আজীবন অবদান এবং নেতৃত্ব স্মরণীয়। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির অন্বেষণ এবং তরুণ প্রজন্মকে জৈনধর্মে গভীরভাবে প্রবেশ করতে অনুপ্রাণিত করা। তার অমূল্য সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ 'জৈন ধরোহর বা ঐতিহ্য দিবস' তার উত্তরাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। এই বছরের উদযাপনটি বিশেষ তাৎপর্য ধারণ করে কারণ এটি জৈন সম্প্রদায়ের দ্বারা পূজিত ভগবান মহাবীরের ২৫৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীর সাথে মিলে যায়। এই অনুষ্ঠানে অনন্যতার একটি অতিরিক্ত স্তর যোগ করেছে ভগবান মহাবীরের ২৫৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। 

অন্যদিকে, শেঠি ট্রাস্টের ট্রাস্টি শ্রী ধর্মেন্দ্র জৈন 'নির্মল কুমার জৈন (শেঠি) মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড' ঘোষণা করেছেন। যাঁরা দর্শন ও সাহিত্য এবং শিল্প ও প্রত্নতত্ত্বে দুটি বিভাগে ব্যতিক্রমী অবদান রেখেছেন এমন ব্যক্তিদের সম্মানিত করা হবে। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে রাজ কুমার শেঠি জোর দিয়ে বলেন, "জৈনধর্ম একটি মূল্যবান উত্তরাধিকার যা আমাদের অবশ্যই সংরক্ষণ এবং লালন করতে হবে। শ্রী নির্মল কুমার শেঠি তার জীবন জৈন সংস্কৃতি এবং ধর্মকে রক্ষা করার জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এখন আমাদের কর্তব্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জৈন ঐতিহ্য রক্ষার মহৎ মিশন।"