বইমেলায় কুরআন ঘিরে মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে, বাবরি-রামমন্দির এফেক্ট?

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: এবার শেষের পথে কলকাতা বইমেলা।  তবে এই মেলা ঘিরে  দেখা গেল নানান আয়োজন।  কথায় আছে 'বইমেলা মানে মেলা বইয়ের সমাহার'। এ যেন নানা ফুলের সাজি। ঠিক কি কারণে এই বইমেলা তার বৈচিত্র এবং কলেবরে  বৃহত্তর আকার ধারণ করছে? তার অন্যতম হল  বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থাগুলোর নতুন বইয়ের ডালি, একইসঙ্গে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির নিজস্ব উপস্থাপনা। সবাই বইমেলাকে পাখির চোখ করছে। কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এবারও ইসকন বা বিভিন্ন খ্রিস্টান সংগঠনগুলি তরফে বাইবেল কিংবা গীতা বিতরণ কর্মসূচি দেখা গিয়েছে। একইভাবে নানা ভাষায় কুরআন উপহার দিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছে 'দা কুরআন স্টাডি সার্কেল' এবং 'আল কুরআন অ্যাকাডেমি, লন্ডন'। 


এই দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে কলকাতা বইমেলার ১৩৬ নম্বর স্টলে প্রথম দিন থেকে হাজার হাজার মানুষকে দেওয়া হয়েছে পবিত্র কুরআনের কপি।  বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, হিন্দি নেপালি ইত্যাদি ভাষায়  হাজার হাজার মানুষকে কুরআন বিতরণ করছে  কুরআন স্টাডি সার্কেল। ৪৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এই সংস্থার তরফে যিনি  কুরআন বিতরণ কর্মসূচি দেখভাল করছেন তিনি হলেন  মাওলানা মুহাম্মদ রাকিব হক। 

এক প্রশ্নই জবাবে রাকিব সাহেব জানান, 'এবারের বইমেলায় মুসলিমদের যেমন কুরআন দেওয়া হয়েছে  তার থেকে বেশি কুরআনের কপি সংগ্রহ করেছেন অমুসলিম ভাইয়েরা। বিভিন্ন পুলিশ অফিসার, সাংস্কৃতিক কর্মী , রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি সাধারণ হিন্দু ভাইদেরও কুরআন নেওয়ার আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো।' তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার কপি নিয়ে আসা হচ্ছে, সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। কুরআন বিতরণ কর্মসূচির উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি বলেন, আসলে পবিত্র কুরআন মুসলিমদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এটি মানবকল্যাণের জন্য ঈশ্বর প্রদত্ত ঐশী গ্রন্থ। তাই আমরা চাইছি কুরআনের ন্যায়, মানবতা এবং শাশ্বত বাণী সব মানুষের কাছে পৌঁছে যাক। জাতপাত এবং উঁচু নিচু সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে সমস্ত মানুষের কাছে পবিত্র কুরআনের শাশ্বত বাণীকে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা এই কাজ করছি। তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু বইমেলা নয় আমাদের অফিস থেকেও এই কপি বিতরণ করে থাকি। তারপর যারা কুরআনের কপি সংগ্রহ করছেন তারা বাস্তবে এর কতটা কাজে লাগাচ্ছেন কিংবা জ্ঞান অর্জন করতে পারছেন এ নিয়ে একটি বৃহত্তর অ্যাসেসমেন্টের ব্যবস্থা কথা ভাবা হচ্ছে। আরও বৃহত্তর আকারে আমরা এই কাজটি করতে চাই।


মল্লিক ব্রাদার্স, হরফ প্রকাশনী, বাংলা ইসলামি প্রকাশনী ট্রাস্টসহ বিভিন্ন ইসলামিক বইয়ের স্টলে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছেন১ বহু মানুষ কুরআন এবং হাদিসের বই সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা বলেন, আসলে মুসলিমদের সম্পর্কে নানান কথা সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারিত হচ্ছে সেই আগ্রহ থেকেই হয়তো মানুষ বেশি করে কুরআনের বিষয়ে জানতে চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ আবার বাবরি এবং রামমন্দির এফেক্ট-এর কথাও বলছেন।

Post a Comment

0 Comments