ঘরের বেটি হাদীদা পেল 'শিক্ষারত্ন', খুশিতে মাতোয়ারা শেরশাবাদিয়া সমাজ

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে প্রত্যেক বছর সরকারের পক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষকদের দেওয়া হয় শিক্ষারত্ন পুরস্কার। এবার সেই পুরস্কার পেলেন মালদহের বাসিন্দা ও বিশিষ্ট অধ্যাপক হাদীদা ইয়াসমিন। তিনি গৌড়বঙ্গের মুখ্য জনজাতি শেরশাবাদিয়া ঘরের মেয়ে। স্বভাবতই খুশি শেরশাবাদিয়া সমাজ। এ নিয়ে চারিদিকে শুভেচ্ছার বন্যা বইছে। ঘরের বেটি হাদীদা ইয়াসমিনের পুরস্কার প্রাপ্তিতে খুশি মালদাবাসী। তাঁকে শেরশাবাদিয়া জোন্হাক বা ব্রাইট স্টার বলে আখ্যায়িত করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল অহাব। 

জানা গিয়েছে, হাদীদার বাবার নাম নাম মুহাম্মদ হাসান আলি। তিনি মালদহ জেলার মহারাজপুর হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন। হাদীদার মা মাসুদা বেগম গাজল ব্লকের নামকরা সমাজ-দরদী ডাক্তার মরহুম মোয়াহ্হেদুর রহমানের মেয়ে। সমাজের খিদমতগার মাসুদা বেগমের ঠাকুরদা ছিলেন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শেরশাবাদিয়া মুখ ও রাজনৈতিক নেতা অ্যাডভকেট মুহাম্মদ সাঈদ মিয়াঁ।



জানা গিয়েছে, জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক হাদীদা ইয়াসমিন জুওলজিতে ১৯৯৮ সালে মালদাহ্ কলেজ থেকে বি.এসসি. অনার্স, ২০০১ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এসসি., আর ২০০৭ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়  থেকেই পি.এচডি. করেন। উনি শিলিগুড়ি কলেজে মাইক্র-বায়োলজি বিভাগে লেকচারার পোস্টে চাকরি করেন ২০০৪-২০০৫ সালে। পরে Indian Council for Medical Research-এর স্কিমে রিসার্চ ফেলো ছিলেন ২০০৫-২০০৮ সালে, ব্রিটেনের সংস্থা FERN-এর সহায়তায় রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট (Post-Doctoral) ছিলেন ২০০৮-২০১০ সালে। নর্থ বেঙ্গল সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ (রায়গঞ্জ)-এ জুওলজি বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও এই বিভাগের প্রধান ছিলেন ২০১০-২০১৬ সাল পর্যন্ত। ওই কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন ২০১২-২০১৬ সাল পর্যন্ত। 

এখানেই শেষ নয়, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুওলজি বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর  ২০১৬-২০১৯ সাল, এই বিভাগের প্রধান ২০১৯-২০২০, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক (Controller of Examinations) পদেও অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলান তিনি। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জুওলজি বিভাগে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে বহাল আছেন।

হাদীদা ইয়াসমিন  ২০০৩ সালে Young Scientist Award পান AIIMS থেকে, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা জুওলজি সোস্যাইটি থেকেও অ্যাওয়ার্ড পান। USA-র Seattle University-তে ট্রাভেল স্কলারশিপ পান ২০১৪ সালে আর Fulbright- Nehru International Educational Administrator 2016-2017 অ্যাওয়ার্ডও হাসিল করেন USA থেকে। ভিজিটিং সাইন্টিস্ট হিসাবে কাজ করেন দিল্লি AIIMS-এর Transplant Immunology and Immunogentics বিভাগে আর Indian National Science Society (New Delhi)-তে ২০১৯-২০ সালে। ইটালির Trieste University-র জীববিজ্ঞান বিভাগে ভিজিটিং সাইন্টিস্ট হিসাবে যান ২০২২ সালে। ভারত সরকার তাঁকে DST-SERB স্কীমে 2022-2025 সালের জন্যে Teacher Associateship Research Award দেন।  জাতীয় আর আন্তর্জাতিকমানের নামী-দামী জার্নালে তার বহু গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

তথ্য সংকলন সহায়তা– অধ্যাপক আবদুল অহাব।

Post a Comment

0 Comments