তুলে দেওয়া হবে রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ? কেন্দ্রের চিঠি ঘিরে প্রশ্ন

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: বিজেপি-শাসিত বেশকিছু রাজ্য মাদ্রাসা শিক্ষার বোর্ড তুলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশকিছু রাজ্যের এখনও রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ।  মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক সমতুল ডিগ্রি দেওয়া হয় পর্ষদ থেকে। এবার কেন্দ্র এই মাদ্রাসা বোর্ডগুলো তুলে দিতে চাইছে? শুধু তাই নয় , মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের জন্য যে পৃথক বোর্ড রয়েছে সেই বোর্ডের উপরেও কোপ পড়তে চলেছে। সম্প্রতি বেশ কিছু খবর ঘিরে এমনই প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে।  

পশ্চিমবঙ্গ-সহ সাতটি রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। তাতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের জন্য পৃথক বোর্ড নয় একটি অভিন্ন পর্ষদ রাখতে হবে।

প্রতীকী ছবি 

অনেকেই অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করে নিজের হাতেই সবকিছু রাখতে চাইছে। অভিন্ন বোর্ড তৈরি করার মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার ধীরে ধীরে মাদ্রাসাগুলি নজর রাখতে চাইছে। বিভিন্ন রাজ্যে যেসব মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ রয়েছে সেগুলোকে টার্গেট করা হবে বলেই মনে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও শিক্ষার মানোন্নয়নসহ যুক্তি খাড়া করেছে কেন্দ্র সরকার। 

জানা গিয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতিতে বদলের পর এবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বোর্ড পরিবর্তনের জন্য ৭ রাজ্যকে সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। এই তালিকায় রাখা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, কেরল, মণিপুর, ওড়িশা এবং তেলেঙ্গানাকে। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, এবার থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা যাতে দুটো আলাদা বোর্ডের পরিবর্তে এক বোর্ডের তত্ত্বাবধানে হয় সেইমতো ভাবনা চিন্তা করতে হবে। জটিলতা এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত বলে কেন্দ্রের ব্যাখ্যা হলেও, আসলে এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

স্কুল শিক্ষা সচিব সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষার্থীদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ফল খারাপ হচ্ছে। অভিন্ন বোর্ড হলে এই সমস্যা এড়ানো যাবে। এই মুহূর্তে দেশে মোট ৬৬টি বোর্ড রয়েছে। যার মধ্যে ৩টি জাতীয় স্তরের বোর্ড এবং ৬৩টি রাজ্য স্তরের বোর্ড রয়েছে। এই রাজ্যস্তরের বোর্ডগুলির মধ্যে ৩৩টি বোর্ডেই শুধুমাত্র ৯৭ শতাংশ পড়ুয়া রয়েছে। বাকি ৩৩টি বোর্ডে রয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ পড়ুয়া। গতবছর সারা দেশে দশম শ্রেণিতে মোট ২২.১৭ লক্ষ পড়ুয়া ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০.১৬ লক্ষ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যদি এক বোর্ড দুই বড় পরীক্ষা পরিচালনা করে তাহলে সেক্ষেত্রে শিক্ষা অধিকর্তাদের ঝক্কি বাড়বে অনেকটাই। পাশাপাশি যেহেতু সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হচ্ছে ফলে প্রশ্নপত্র তৈরি বা উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সময়ের ঘাটতি হতে পারে শিক্ষক- শিক্ষিকাদের।

Post a Comment

0 Comments