নিউ টাউন হজ হাউসে নাচ-গানের আসর! সবাইকে নিয়েই চলতে হবে, সাফাই কর্তৃপক্ষের

আসিফ রেজা আনসারী

বিয়ের অনুষ্ঠানে ভাড়া দেওয়া, বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার কোচিং দেওয়া কিংবা বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কলকাতার চিকিৎসা, পরীক্ষা জাতীয় কাজে ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার বন্দোবস্ত করা, এ পর্যন্ত ঠিক ছিল। তাই বলে নাচ-গানের আসর! তাও আবার হজ হাউসে? কোথাও গিয়ে অবাক হওয়ার মত ব্যাপার। তবে এমনটাই ঘটেছে কলকাতার নিউ টাউনে অবস্থিত হজ হাউস মদিনাতুল হুজ্জাজে। আর সেখানে নাচ গানের যে একপ্রকার আসর বসেছে, তা স্বীকারও করে নিয়েছে রাজ্য হজ কমিটির একাংশ।
বুধবার দু’দিনের কলা উৎসব-২০২২ শুরু হয়েছে কলকাতায়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পড়ুয়ারা এই উৎসবে অংশগ্রহণ করছে। বুধবার সল্টেলেকের ইন্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টার বা ইজেডসিসি'তে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। জানা গিয়েছে, ইজেডসিসি’র পাশে ঐক্যতান এবং নিউ টাউনের মদিনাতুল হুজ্জাজে এই কর্মসূচি চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। 
দুটি ভেন্যুতে গান, লোকনৃত্য, লোকগান, ছৌ নৃত্য-সহ লোকসংস্কৃতির নানা বিষয়ের প্রোগ্রাম হবে। অংশগ্রহণকারীদের কলকাতায় থাকারও বন্দোবস্ত করেছে রাজ্যের সমগ্রশিক্ষা মিশন।
হজ হাউসে নাচ ও গানের অনুষ্ঠান হচ্ছে সরাসরি স্বীকার করেনি হজ হাউস কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে সেখানে শুধু পড়ুয়াদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যদিও রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের নথি বলছে হজ হাউসের মধ্যেও হবে এই নাচ-গানের অনুষ্ঠান। 

এক প্রশ্নের জবাবে রাজ্য হজ কমিটির এক অফিসার জানান, যদি শিল্পী ও পরিচালকরা হজ হাউসের মধ্যে ‘মহড়া’ করেন, তাহলে তো তাঁদের রোখা যাবে না। তাঁরা করছেন, কী করব। আমাদের তো সকলকে নিয়েই চলতে হবে।
এখন প্রশ্ন হল- রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের অধীন  নিউ টাউনের হজ হাউসে হাজিদের পরিষেবা প্রদানের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের ক্ষমতায়ন নিয়েই কাজ হওয়ার কথা, নাচ ও গানের মাধ্যমে কী তা হয়? হজ হাউসের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংখ্যালঘুদের আবেগ জড়িত। শুধু তাই নয়, হজের মর্যাদা ও হাজীদের সম্মানও জড়িত। তার মর্যাদা রক্ষা হল কী? 
অনেকেই বলছেন কৈখালীতে থাকা হজ হাউস ছাত্রীদের হস্টেল হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, এটা একটি ইতিবাচক দিক। এমনই কোনও বিশেষ কাজে ব্যবহার করা হোক। যেখানে ইসলাম ধর্মে নাচ গান নিয়ে অনেক কড়াকড়ি রয়েছে, তারপরও এমন কাজ হলে কোথাও গিয়ে হাজীদের কী অসম্মান করা হচ্ছে না! 
প্রসঙ্গত, বুধ ও বৃহস্পতিবারের এই কলা উৎসবে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার থেকে বহু পড়ুয়া অংশগ্রহণ করেছে। মূলত মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়ুয়ারা এই অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে। রাজ্য পর্যায়ের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারিরা কেন্দ্রীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সুযোগ পাবে।

Post a Comment

0 Comments