আসিফ রেজা আনসারী
মেয়েগুলো ফেল করেছে, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করতে পারেনি। তারা বানান জানে না। বাংলায় ভালো করে নাম লিখতেও অনেকেই জানে না। এটা কোনও অপরাধ নয় বরং এটাই স্বাভাবিক। এর জন্য দায়ী রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা এবং সামগ্রিকভাবে আমরা, অর্থাৎ শিক্ষিত সমাজ। যখন শিক্ষক নিয়োগ হবে, কারা পড়াবেন তাদের যোগ্যতার সঠিক বিচার করা হয় না আমরা নিজেরাও নিজেদের যোগ্যতা না থাকার পরেও শিক্ষক হওয়ার চেষ্টা করি। টাকা দিয়ে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করি। ফলে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা এমন নড়বড়ে হবে। এটাই স্বাভাবিক ছিল।
আর জনগণও এর জন্য অনেকটা দায়ী। দু'টাকার চালের জন্য আমরা ভোট দিই। সামগ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আমাদের কোন চিন্তা-ভাবনা থাকে না। ফলে এমন দুরাবস্থা হওয়াটা কোনও অন্যায় নয়।
এখনও সময় আছে ঘুরে দাঁড়ানোর। রাষ্ট্রকে প্রশ্ন করুন, আমার ট্যাক্সের টাকায় কেন অনুপযুক্ত, অশিক্ষিত এবং পড়ানোর দক্ষতা নেই এমন মানুষকে শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে? স্কুল কেন সঠিক সময়ে খোলা হচ্ছে না? কেন ছেলেমেয়েদেরকে সঠিকভাবে পড়ানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে না? এই প্রশ্ন আপনি তুলুন। তারপরে মেয়েগুলোকে দোষ দেবেন।
আমরা হাসাহাসি করছি, বেশ মজা নিচ্ছি। এটা ঠিক। কিন্তু এর বাইরে গিয়ে অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধান করা অত্যন্ত দরকার। না হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। আমরা গভীর নিরক্ষরতা এবং অন্ধকারের দিকে এগোচ্ছি। যাদের টাকা আছে ভালো স্কুলে পড়িয়ে নেবেন, যারা সাধারন মানুষ, আমি-আপনি তাদের পরবর্তী প্রজন্ম এমনই নড়বড়ে হবে। তাদের পাশ সার্টিফিকেট ধরিয়ে দেওয়া হবে, কিছু শিখতে পারবে না। আখেরে একটা ঘুনধরা সমাজ তৈরি হবে।
0 Comments