আদিবাসী অধ্যাপিকার প্রতি জাতি­–বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের অভিযোগে গ্রেফতার অধ্যাপক নির্মল বেরা

ডেস্ক: সহকর্মী এক অধ্যাপিকার প্রতি জাতিবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এক অধ্যাপকজানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকাকে জাতিবিদ্বেষমূলক মন্তব্য এবং মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কলেজেরই বাংলা বিভাগের অধ্যাপক নির্মল বেরাকে। সোমবারই তাঁকে আদালতে তোলা হবে বলে খবর।

সবং কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপিকা পাপিয়া মাণ্ডির অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীন কলেজের ওই বিভাগের অধ্যাপক নির্মল বেরা তাঁর জাতিতুলে অপমানজনক মন্তব্য করেন। এরপর, কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও, কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। তাই ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পাপিয়া। গতবছর ১৯ অক্টোবর তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। পরে অবশ্য অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তদন্তে সত্যতা বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার দত্ত।

এ নিয়ে সরব হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের ভারত জাকাত মাঝি পরগাণা মহল। সবং কলেজ ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছিল। লাগাতার প্রতিবাদ উঠে এসেছিল সংগঠনের পক্ষ থেকে। অবশেষে অভিযুক্ত নির্মল বেরাকে গ্রেফতার করল সবং থানার পুলিশ। সোমবার তাঁকে মেদিনীপুর আদালতে তোলার কথা ছিল। 

এদিকে আদিবাসী সংঘর্ষ মোর্চা, ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল, দিশম আদিবাসী গাঁওতা, অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ‍্যাসোসিয়েশন, সাঁওতালি সাহিত‍্য একাডেমি মেদিনীপুর, সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠন ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়েছে। 'প্রতিবাদী ঐক‍্য মঞ্চ' গড়ে ৬ ডিসেম্বর জেলাশাসককে স্মারকলিপি প্রদান, ২১ ডিসেম্বর ভাজামাপামের ডাকে কলেজ ঘেরাও ও যাদবপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভসভা, ৯ জানুয়ারি মেদিনীপুর শহরে গণকনভেনশন, ১৭ জানুয়ারি সাতটা জেলায় ডেপুটেশন ও প্রতিবাদসভা ইত‍্যাদি সংগঠিত করার পর আগামি ৪ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানির দিন মেদিনীপুর আদালতের সামনে মৌন প্রতিবাদ কর্মসূচীর ডাকও আছে। এসবের পর একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হল। আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, দ্বিতীয় অভিযুক্ত কলেজের অধ‍্যক্ষ তপন দত্ত গ্রেফতার হল না কেন? তিনিও তো একই ধারায় অভিযুক্ত এবং তাঁর অপরাধেরও সুনির্দিষ্ট তথ‍্যপ্রমাণ রয়েছে। তিনি অধ‍্যক্ষের আসনে বসে থেকে সাক্ষীদের ভয় দেখানো সহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অবিলম্বে অধ‍্যক্ষকে গ্রেপ্তার করতে হবে। আগামি ৪ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুর আদালতের সামনে সুবিচারের দাবিতে মৌন প্রতিবাদ প্রদর্শনের আহ্বান জারি থাকছে বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

Post a Comment

0 Comments