আফগানিস্তান: তালিবান দখলদারি দেশটিকে নৈরাজ্য ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে, বিবৃতি সিপিআই(এম-এল)-এর

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান। যা নিয়ে বিশ্ব রাজনীতি তোলপাড়। এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক কালের ভারত সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়েও প্রশ্ন তুলল সিপিআই(এম-এল)। দলের তরফে জানানো, আফগানিস্তানের চলমান ঘটনাক্রমে আমরা গুরুতরভাবে উদ্বিগ্ন। সাধারণ নাগরিকদের উপর হিংসাত্মক অপরাধ, মহিলাদের উপর নিপীড়ন, মানবাধিকার ও স্বাধীনতার উপর আক্রমণের খবর দেখিয়ে দিচ্ছে যে, তালিবানদের নাটকীয়ভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল দেশটিকে ব্যপক নৈরাজ্য ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

আমেরিকার বিদেশনীতি এই সাম্প্রতিক বিশৃঙ্খলার জন্য সর্বতোভাবেই দায়ী। ১৯৮০ ও ১৯৯০ তে তালিবানের উত্থানের পথ মসৃণ করার সময় থেকে ৯/১১ পরবর্তীতে আফগানিস্তানে অনুপ্রবেশ ও দখলদারি হয়ে আজকের অপরিকল্পিত মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সন্ধিক্ষণ পর্যন্ত আমেরিকার সামরিক হস্তক্ষেপ ও কব্জা করার এই নকশা আফগানিস্তানকে এই দুর্দশার খাদে এনে ফেলেছে।


১৯৯৬ - ২০০১ এর তালিবানি শাসনের অতীত অভিজ্ঞতা  এবং এর চরম পশ্চাৎপদ ও অনুশাসনের নিগড়ে বাঁধা মতাদর্শ ও রাজনীতি গোটা বিশ্বকে বিশেষত সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াবাসীকে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গভীর উদ্বেগের মধ্যে রেখেছে। আমরা আশা করি বিশ্ব জনমত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ আফগানিস্তানের আসন্ন তালিবান জমানাকে সংযত করবে এবং সেখানকার জনগণকে সমস্যাদীর্ণ দেশটিতে শান্তি, প্রগতি ও গণতন্ত্রের লক্ষ্যে নিজেদের মত করে লড়াই চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে।
আমরা ভারত সরকারের কাছে আফগানিস্তানে থাকা সমস্ত ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা এবং বর্তমানে পড়াশোনা, জীবিকা ও অন্যান্য কাজে ভারতে বসবাসকারী আফগান নাগরিকদের এদেশে নিরাপদে বসবাস ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। বর্তমান সংকট বহু আফগান নাগরিককে তাঁদের দেশে শান্তি ও স্থিতি না ফেরা পর্যন্ত ভিনদেশে শরণার্থী হতে বাধ্য করবে। ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন যে কতটা অযৌক্তিক তা এই সন্ধিক্ষণে আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে। আইনটিতে যে বৈষম্য আছে তা আফগানিস্তান থেকে আসা মুসলমান শরণার্থীদের গুরুতর অসুবিধায় ফেলবে।

যখন আফগানিস্তান সহ গোটা দুনিয়ায় শান্তি, সুস্থিতি ও গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য আফগান নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোই কর্তব্য তখন আফগানিস্তানের বিকাশমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এ'দেশে ইসলামবিদ্বেষ ও হিংসা ছড়ানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে আমাদের সতর্কতার সাথে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আফগানিস্তানে ধর্মান্ধ শক্তির উত্থানের প্রেক্ষিতে আমাদের দেশে ধর্মান্ধতাকে প্রত্যাখ্যান করার এবং আমাদের নিজেদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সামাজিক প্রগতি ও গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে মজবুত করার জন্য আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।

Post a Comment

0 Comments