টেলি-মেডিসিন: মিমি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অন্য সংগঠনের নম্বর নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল মিররঃ করোনার এই সংকটকালে সরকার একদিকে যেমন নিজেদের মতো করে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তেমনি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এনজিও, ছোটখাটো সংগঠন ও চিকিৎসক সংগঠনগুলি মানুষের স্বার্থে চালু করেছে টেলি-মেডিসিন পরিষেবা। এক্ষেত্রে ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-এর নাম উল্লেখযোগ্য। এই সংগঠনগুলি একদিকে যেমন টেলি-মেডিসিন চালু করেছে, তেমনি বিভিন্নভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাতে চেষ্টা করছেন। ডাক্তাররা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্লাটফর্মে নিজেদের ফোন নম্বর শেয়ার করেছেন, যাতে বিপদের সময় মানুষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সেই নম্বরকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। এমনই অভিযোগ। যদিও সাংসদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Photo from instagram, Mimi chakraborty
খবরে প্রকাশ করোনার এই দ্রোহকালে বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছেন মিমি চক্রবর্তী। সেই নম্বরে যোগাযোগ করে মানুষ পরিষেবা পাবেন। সাংসদ মিমি চক্রবর্তী নিজের ইনস্টাগ্রামে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন, তাতে সে কথা নিজেই বলেছেন সাংসদ। একইসঙ্গে তিনি একটি বিশেষ নম্বর দিয়েছেন এবং একটি ডাক্তারদের তালিকা ও ফোন নম্বর পোস্ট করেছেন। অভিযোগ, ওই ফোন নম্বর বা চিকিৎসকরা কেউ মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে যুক্ত নন। তাদের মধ্যে দু'জন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম এবং বাকি সকলেই অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-এর সদস্য।

ডাক্তাররা যেহেতু পরিষেবা দিচ্ছেন তাতে কোনো আপত্তি নেই, তাদের নম্বর মানুষের কাছে যাক কিন্তু ন্যূনতম কৃতজ্ঞতা কেন স্বীকার করা হল না? এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মানস কুমার গুমটা। তিনি বলেন, আমরা এই বিপদের দিনে সাধ্যমত মানুষের কাছে দাঁড়াবার চেষ্টা করেছি। চিকিৎসার সংকটকালে কেউ যাতে অসুবিধায় না পড়েন তার জন্য নিজেদের ফোন নম্বর দিয়ে এলাকাভিত্তিক টেলি-মেডিসিন পরিষেবা চালু করেছি। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার মানুষকে পরিষেবা দিতে ব্যর্থ, তবুও আমরা আমাদের সাধ্যমত পরিষেবা দেবার চেষ্টা চালাচ্ছি। একজন সাংসদ আমাদের না জানিয়ে আমাদের ফোন নম্বর ব্যবহার করে নিজে ফায়দা লুটতে চাইছে! এ নিয়ে সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। চিকিৎসক সংগঠনের বক্তব্য- তারা একটি লিখিত প্রতিবাদ সাংসদকে পাঠিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। এখন প্রশ্ন উঠছে বহরমপুর সংসদ অধীর চৌধুরী,  সিপিএম নেতা ডা. ফুয়াদ হালিম বা রেড ভলেন্টিয়ার্সরা যখন বিভিন্নভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াবার চেষ্টা করছেন, তখন হেল্পলাইন-এর নাম করে একজন সাংসদ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন কেন?
প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ফোন নম্বর ছড়িয়ে দিয়েছে কেউ কেউ। সেই সংক্রান্ত পোস্টে বলা হয়েছে এনারা মানুষের সেবা করতে চেয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে তাদের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে সাহায্য চাও। এখন প্রশ্ন উঠছে আদৌ কি তারা মানুষের স্বার্থে রাজনীতিতে এসেছেন নাকি ব্যক্তিগত সুবিধার জন্যই! একজন দায়িত্বশীল সাংসদ হয়েও এভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং মানুষকে ভাওতা দেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়েছে নেট দুনিয়ায়। যদিও সাংসদের তরফ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। 

Post a Comment

0 Comments