অনুপম-আহসান-সাকিউলদের হাত ধরে মেটিয়াবুরুজে সম্প্রীতির রক্তদান শিবির

আসিফ রেজা আনসারী

মেটিয়াবুরুজ মানেই যেন আতঙ্ক। কি জানি প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হয়। মুসলিম পাড়া রাত-বিরেতে একদমই যাওয়া চলে না। ঠিক এভাবেই মানুষগুলোকে তুলে ধরা হয়েছে এতদিন। কিন্তু মিশে দেখলে সব ধারণা পালটে যাবে। বলছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও রক্তদান আন্দোলনের কর্মী অনুপম ভট্টাচার্য। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে এই এলাকায় মিশছেন। বুধবার রক্তদান শিবিরের ফাঁকে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে। 
প্রসঙ্গত, এদিন থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য সম্প্রীতির রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয় মেটিয়াবুরুজে। ‘কোয়েস্ট ফর লাইফ’ ও ‘মোহাম্মদী মিশন কলকাতা ট্রাস্ট’-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয় ওই শিবির। যেখানে প্রায় দেড়শো জন রক্তদান করেন। তার মধ্যে মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সেখ সাবির আলি, সাকিউল রহমান, নাইম মোল্লা, অনুপম ভট্টাচার্য, আহসান উল্লা, শাহজাদা, কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
Team Quest for Life and Mohammadi mission

এক প্রশ্নের জবাবে অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্তের জোগান দিতেই ফেসবুকের মাধ্যমেই সকলের এক হওয়া। বিগত প্রায় চার বছর ধরেই আমরা ‘কোয়েস্ট ফর লাইফ’-এর ব্যানারে রক্তদান শিবির করছি। কখনও মন্দির তো কখনও বা মাদ্রাসা কমিটি, নানান ভাবেই তাঁরা মানুষের কাছে যাচ্ছি এবং রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা কিছু থ্যালাসেমিয়া রোগীর দায়িত্ব নিয়েছি। রক্ত দেওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয়েও পাশে আছি তাদের। এদিন আঞ্জুমান মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয় রক্তদান শিবিরে হিন্দু-মুসলিম, মহিলা ও পুরুষ মিলিয়ে ব্যাপক সাড়া ছিল স্থানীয়দের। তিনি আরও জানান, জরুরি ভিত্তিতে কারও রক্তের দরকার হলে তাঁরা রক্তের বন্দোবস্ত করে থাকেন। অন্যদিকে, কামরুল ইসলাম নিজে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও রক্তদান শিবিরে যোগ দেন। তাঁর কথায়, সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করতেই কষ্ট হলেও এসেছি।
এদিনের রক্তদান শিবিরে পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতও ব্যবহার করে প্রচার করা হয়েছিল। যাতে লেখা রয়েছে- ‘যে ব্যক্তি কারও জীবন রক্ষা করল, সে যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষের জীবন রক্ষা করল। এ প্রসঙ্গে আয়োজকরা বলেন, রক্তদান করা নেকির কাজ। মেটিয়াবুরুজের মানুষ অন্যদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে জানে। আমাদের এলাকা নিয়ে অপপ্রচার হয়। কিন্তু যেভাবে প্রায় দেড়শো জন রক্তদান করেছেন, তা অন্য কথা বলে। আগামী দিনে আরও বড় ক্যাম্প করার কথাও বলেন তাঁরা।

Post a Comment

0 Comments