শান্তনু সেন
কারাগার চত্বরে জয় শ্রীরাম ধ্বনি উঠছে মুহুর্মুহুঃ। উপস্থিত জনতা হতবাক। কীসের জন্য এই ভগবানের নাম ডাক! মুহূর্তে মানুষের ভুল ভাঙে। কিছু নয় বিজেপি ও আরএসএস কর্মীরা ফুলমালা নিয়ে স্বাগত জানাতে এসেছেন ২৫ বছর আগের জেলে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ান পাদ্রী গ্রাহাম স্টেইনের হত্যাকারীকে মালা পরানোর জন্য। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উড়িষ্যার ঘটনা নিয়ে এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান মিশনারী গ্রাহাম স্টেইন তাঁর দুই নাবালক পুত্রের সঙ্গে হত্যার শিকার হন। তিনি রাত্রিবেলা যখন জিপ গাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন তখন তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল। সেসময় কুষ্ঠ রোগীদের সেবা করতেন এই খ্রিস্টান পাদ্রী। কিন্তু অভিযোগ তিনি নাকি ধর্ম প্রচার করছেন এ মিথ্যা অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়। সে সময় পুলিশ বহু মানুষকে গ্রেফতার করেছিল। শেষ পর্যন্ত সাজা পান কয়েকজন, তাদের মধ্যে অন্যতম মহেন্দ্র হেমব্রম।
![]() |
বাঁ দিকে মালা পরে হেমব্রম, ডানে পুরানো ছবি |
এই দাগনা আসামী নাকি জেলের মধ্যে খুব ভালো আচরণ করেছেন, তাই তার সাজা মুকুব করে মুক্তি দিয়েছে বিজেপি সরকার। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর এরকম একজন খুনিকে মুক্তি দেওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ দিকে কারামুক্তির পর মহেন্দ্র হেমব্রম দাবি করেন, তাকে মিথ্যাভাবে জড়ানো হয়েছিল। বিনাদোষে পঁচিশ বছর জেলখাটা হয়েছে। এখন তিনি মুক্ত।
জানা গিয়েছে, ১৯৯৯ সালে খ্রিস্টান মিশনারি অস্ট্রেলিয়ান গ্রাহাম স্টেইন তার দুই পুত্রকে নিয়ে জিপ গাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাদেরকে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়। জিপের মধ্য থেকে বের হতে চাইলেও হামলাকারীরা লাঠি নিয়ে তাকে আক্রমণ করে, কিছুতেই বের হতে দেয়নি। ফলে জীবন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৫৮ বছরের গ্রাহাম, তার দুই পুত্র ফিলিপ ও তিমিথির। এ হামলার নেতৃত্ব ছিল দারা সিং বলে একজন। পরে ৫১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩৭ জন ছাড়া পেয়ে গেলেও ১৪ জনের নামে চার্জশিট জমা হয়। তাদের মধ্যে ১২ জন বেকসুর খালাস পান। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় হেমব্রম এবং দ্বারা সিংহের। এবার তাকেই মুক্তি দিল বিজেপি সরকার।
0 Comments