জাহানারা খাতুন
শাসকশ্রেণি পার্লামেন্টে সংখ্যার জোরে পাস করেছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির সই-এর মাধ্যমে তা আইনে রূপান্তরিত হয়েছে। তবুও প্রতিবাদ জারি রেখেছে মুসলিম সম্প্রদায়। তাদের অভিযোগ, নয়া আইনে কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল বা রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য নিয়োগ করা হবে। ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ বাড়বে সরকারের। এমন ঘটনা সংবিধান বিরোধী। তাই নয়া আইন বাতিল করা হোক এবং সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল'বোর্ড। দেশজুড়ে চলছে সংগঠনের আন্দোলন।এরই মধ্যে অভিনব প্রতিবাদ করতে চলেছে মুসলিম পার্সোনাল ল'বোর্ড। কাল বুধবার আলো নিভিয়ে জানানো হবে নীরব প্রতিবাদ।
![]() |
প্রতীকী ছবি |
এ নিয়ে সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ ফজলুর রহিম মুজাদ্দেদী এক প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, ওয়াকফ আইন ২০২৫ এর বিরুদ্ধে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ডের নির্দেশ অনুসারে, দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। এই প্রতিবাদের একটি প্রচলিত পদ্ধতি হল কিছু সময়ের জন্য আলো নিভিয়ে রাখা। এটি একটি প্রতীকী বার্তা যে আমরা জুলুমের বিরুদ্ধে আছি, আমরা সচেতন আছি এবং নিজেদের অধিকার অর্জনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছি। আলো নিভানো কোনও দুর্বলতার চিহ্ন নয়; বরং এটি দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক যে আমরা এগিয়ে চলব এবং সংগ্রাম চালিয়ে যাব। এই লক্ষ্যেই বোর্ডের পক্ষ থেকে 'বাতি বন্ধ আন্দোলন' (বতী গুল তহরিক) ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এবার সমস্ত মুসলিম ভাই-বোনদের এবং দেশের ন্যায়প্রেমী নাগরিকদের প্রতি আবেদন করা হচ্ছে যে, ৩০ এপ্রিল রাতে ৯:০০টা থেকে ৯:১৫টা পর্যন্ত নিজেদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, কারখানা এবং অন্যান্য সব স্থানের আলো নিভিয়ে দিন। বাতি বন্ধ করুন। আলো নিভানোর উদ্দেশ্য হল জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং শাসকশ্রেণির বিবেককে জাগ্রত করা। তাই বোর্ডের নির্দেশ অনুসারে এই কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে সম্পন্ন করা আবশ্যক। জুমার নামাযে পর মসজিদে এই কর্মসূচির ঘোষণা করা উচিত এবং প্রতিটি এলাকার প্রভাবশালী উলামা, বুদ্ধিজীবী ও সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা নিজ নিজ পক্ষ থেকে ভিডিয়োবার্তাও প্রকাশ করুন। তরুণ সমাজের প্রতি অনুরোধ, তারা মানুষের কাছে পৌঁছে ভালবাসা ও আন্তরিকতার সাথে এই বার্তা পৌঁছে দিক এবং সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে এই প্রচার আরও বিস্তৃত করুক। বাতি বন্ধ আন্দোলন সফল করুন। এই বাতি বন্ধ আন্দোলন একটি প্রতীকী বার্তা হবে যে, ওয়াকফ আইন ২০২৫ আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। একইসঙ্গে সরকারের কাছে এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হবে। তিনি বলেন, আমরা আশা করি যে দেশের সকল ন্যায়প্রেমী নাগরিকগণ এই আন্দোলনে আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করবেন।
0 Comments