উন্নত লিভারের লক্ষ্যে মণিপাল হাসপাতাল ওল্ড এয়ারপোর্ট রোডের অভিনব প্রচেষ্টা

বেঙ্গল মিরর ডেস্ক: ভারতে প্রতি বছর ২,৬৮,০০০ এরও বেশি মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন লিভারজনিত সমস্যার কারণে। বর্তমানে ফ্যাটি লিভার সম্পর্কিত রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং হেপাটাইটিস এবং দীর্ঘস্থায়ী লিভার রোগের মতো সমস্যা ধরা পড়ছে শুধুমাত্র নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করানো এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবের কারণে। যদি এইরকমই চলতে থাকে তাহলে ভারতের "লিভার রোগের বিশ্ব রাজধানী" হয়ে ওঠার আর বেশি দেরি নেই । জীবনধারা-সম্পর্কিত লিভার এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির সংখ্যা মাথায় রেখে মণিপাল হাসপাতাল ওল্ড এয়ারপোর্ট রোড, ২০২৫ সালের বিশ্ব লিভার দিবসে বর্ধমান শহরজুড়ে সর্বসাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যকর জীবনধারার লক্ষ্যে নানান প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে যাতে এই ব্যাধিগুলির বিপরীতে লড়াই করা সহজ হয় ।

প্রায়ই খারাপ খাদ্যাভ্যাস, বসে থাকার অভ্যাস এবং মদ্যপানের অপব্যবহারের মতো জীবনযাত্রার কু-অভ্যাসের কারণে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা, সিরোসিস, ভাইরাল হেপাটাইটিস এবং পিত্তথলির সমস্যা বৃদ্ধি পায়। নিশ্চিত করে বলা সম্ভব যে, ফ্যাটি লিভার রোগের মতো লিভারের নানান সমস্যা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। শাকসবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং অ্যালকোহল ও তামাক বর্জন, লিভারের চর্বি, প্রদাহ এবং ফাইব্রোসিস কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করে। এমনকি ওজন হ্রাসও লিভারের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে এবং রোগের বৃদ্বি পাওয়া রোধ করতে পারে।

নিজস্ব

এই পরিবর্তনগুলি কেবল লিভারের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করে না বরং ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমাতে পারে। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয়, সঠিক ধারণা এবং সঠিক স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করলে তা রোগ প্রতিহত করতে বেশি কার্যকর এবং সুস্থ দীর্ঘ জীবন লাভে ভালো কাজ করে । 

লিভারের স্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্লিনিকাল দিকগুলি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, এইচপিবি এবং লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন সার্জারির পরামর্শদাতা ডা. লোহিত শেঠি রাজু বলেন, “আমরা ফ্যাটি লিভার থেকে লিভার ক্যানসার পর্যন্ত লিভারের সমস্ত রোগের সম্পূর্ণ সমস্যা সমাধান সম্ভব। সর্বশেষ অস্ত্রোপচার এবং শল্যচিকিৎসা ছাড়াই নানান পদ্ধতি ব্যবহার করে রোগীকে সুস্থ করাই আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। আমাদের সর্বপ্রথম চেষ্টা হল রোগীর ব্যাপক যত্নের মাধ্যমে রোগের প্রাথমিক সনাক্তকরণ, জীবনধারা পরিবর্তন এবং ন্যূনতম আক্রমণাত্মক এন্ডোস্কোপিক এবং রোবোটিক সার্জারির মাধ্যমে রোগীদের বিভিন্ন জটিল লিভারের অবস্থা থেকে পুনরুদ্ধারের সর্বোত্তম সুযোগ প্রদান করা।”

এর পাশাপাশি ডা. কে হেমন্ত কুমার, কনসালটেন্ট - সার্জিক্যাল গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি, জিআই অনকোলজি এবং এইচপিবি, রোবোটিক সার্জারি উল্লেখ করেন, "উন্নত ডায়াগনস্টিকস এবং চিকিৎসা থেরাপির সহায়তায় গ্যাস্ট্রো কেয়ারের প্রতি আমাদের বহুমুখী পদ্ধতি, প্রাথমিক পর্যায়ের জিআই এবং লিভারের রোগীদের ক্ষেত্রে সুস্থ হওয়ার দিকে ব্যাপক উন্নতি করেছে। সময়মত চিকিৎসা প্রদানের সঙ্গে জীবনযাত্রার সংশোধনে আমরা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি।সাধারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তন যেমন ভালো পুষ্টিকর প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, দেরি করে রাতের খাবার এড়িয়ে চলা, খাবারের মধ্যে অতিরিক্ত অনুপযুক্ত খাবার না খাওয়া, প্রচুর জল পান করা, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ করা, অ্যালকোহল এবং ধূমপান বন্ধ করা বেশিরভাগ জিআই এবং লিভার সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধ করবে।"

বর্ধমানের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে, মণিপাল হাসপাতাল ওল্ড এয়ারপোর্ট রোড প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা রূপান্তরের দিকে একটি পরিবর্তন আনছে, বিশ্বমানের ক্লিনিকাল দক্ষতাকে একটি সম্প্রদায়-প্রথম পদ্ধতির সাথে একত্রিত করে মানুষকে দীর্ঘতর, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে সহায়তা করে।

Post a Comment

0 Comments