ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল বা রুফাইদা আল আসলামিয়া: যে নাম আজও অমলিন

আসিফ রেজা আনসারী

আজ নার্স ডে পালন করছে গোটা দুনিয়া। সবাই ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে স্মরণ করছেন। তিনি যেভাবে মানুষের সেবা করেছেন, তাতে তাঁর সম্মান অবশ্যই প্রাপ্য। তিনি যেমন সেবিকা বা নার্স ছিলেন, তেমনি আর এক মহিয়সী নারীর নামও সমানভাবে উচ্চারিত হয়। ভারতীয়দের কাছে সেই নাম হয়তো বেশি পরিচিতি লাভ করেনি। কিন্তু সেই মহিলার কাজ ও অবদান সমান গৌরবের দাবিদার।
আমরা আলোচনা করব, রুফাইদা আল আসলামিয়া (রা.)–র কথা। তিনি আসলে নবীর সাহাবী ছিলেন। জানা যায়, তিনি খাজরাজ গোত্রের শাখা আসলাম গোত্রের সন্তান।তাঁকে সবাই রুফাইদা আল আসলামিয়া (রা.) নামেই চিনতেন। তথ্য বলছে, মদিনায় হযরত মুহাম্মদ সা. ইসলামের বার্তা নিয়ে গেলে তিনি প্রথম মুসলিম হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, যুদ্ধের ময়দানে অসুস্থ হয়ে যাওয়া মানুষদের তিনি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতেন।
Rufaida Al-aslamia and Florence Nightingale.TBM

রুফাইদা আল আসলামিয়া (রা.) ছিলেন প্রথম নারী মুসলিম সেবিকা ও স্বীকৃত একজন চিকিৎসক। তিনি তাঁর চিকিৎসক বাবা সাদ আল-আসলামির কাছ থেকেই চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে শিক্ষাগ্রহণ করেন। তাঁর পাণ্ডিত্য ও সেবা প্রদানের জন্য সবার চোখের মণি ছিলেন রুফাইদা আল আসলামিয়া (রা.)। যুদ্ধে আহত সব সৈনিককে চিকিৎসার জন্য রুফাইদা আল আসলামিয়া (রা.) কাছে পাঠাতেন মুহাম্মদ। সউদি সরকারের গেজেট ও অন্যান্য তথ্য থেকে জানা যায়, খন্দকের যুদ্ধের দিন সাআদ (রা.)-এর চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে রুফাইদার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। রুফাইদা আল আসলামিয়া (রা.) সাআদ (রা.)–এর চিকিৎসা করেন।
আহতদের সেবা করতে মসজিদে একটি তাঁবু করেছিলেন। তাঁর সেই অস্থায়ী হাসপাতালকে বলা হত খিমাতু রুফাইদা।বলা হয়, আজকের পৃথিবীর ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল ও চিকিৎসার ধারণাটি এখান থেকেই মানুষ গ্রহণ করেছে। (এডি জাব্বার, ইউনে হিসতোরিয়ে, পৃষ্ঠা : ৩১৯)। খাইবার যুদ্ধে আহতদের সুস্থ করতে তিনি মাতৃত্বের হাত বাড়িয়ে দেন। তাঁর কাজের জন্য মুহাম্মদ সা. তাঁকে সম্মানিত করেন।আজকের বিশ্বেও তিনি ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের মতো নারী চিকিৎসক ও নার্সদের আইডল হয়ে আছেন। তাঁর সম্মানে বাহরাইনের Royal College of Surgeons in Ireland প্রতিবছর Rufaida Al-Aslamia Prize in Nursing প্রদান করে।
তথ্য সহায়তা-মাইমুনা আক্তার

Post a Comment

0 Comments