সিএএ-এনআরসিতে আদৌ কী হিন্দুরা সুবিধা পাবে? শহরে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদন, বেঙ্গল মিরর: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কতোই না কথা। আদৌ কী হিন্দুদের সুবিধা দেবে? প্রশ্ন রয়েছে। এরই মাঝে মারাত্মক অভিযোগ করলেন বিশিষ্টজনেরা। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি শুধু দেশের সংবিধানের উল্লঙ্ঘন নয়– এটি বিভাজনের রাজনীতি। অভিযোগ বাংলার বুদ্ধিজীবীদের। সোমবার সন্ধ্যায় অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস সভাগৃহে সদ্ভাবনা মঞ্চ ও ফোরাম ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড কমিউনাল অ্যামিটি-র যৌথ উদ্যোগে বিশেষ আলোচনাসভা। ওই আলোচনাসভায় এমনই অভিযোগ তুলেছেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন– জামাআতে ইসলামি হিন্দের রাজ্য সভাপতি মাওলানা আবদুর রফিক– বৌদ্ধ ধর্মগুরু ড. অরুণজ্যোতি ভিক্ষু– বিশ্বকোষ পরিষদের পার্থ সেনগুপ্ত– অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দে– মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র– অধ্যাপক রতন খাসনোবিশ– শিখ নেতা তসলিম সিং– সমাজকর্মী ছোটন দাস–  ডা. মশিহুর রহমান– ওসমান গণি প্রমুখ।
ছবি : সন্দীপ সাহা
সদ্ভাবনা মঞ্চের সভাপতি পার্থ সেনগুপ্ত বলেন– কয়েকটি ধর্মীয় গোষ্ঠীকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে যে সংশোধনী আইন পাস হয়েছে– তা কোনও মতে মেনে নেওয়া যায়না। তাঁর অভিযোগ– বিজেপি ভারতের ঐতিহাসিক মিলন ও ধর্মীয় সহাবস্থানকে ভেঙে দিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইছে। একই কথা বলেছেন– বৌদ্ধ ধর্মগুরু ড. অরুণজ্যোতি ভিক্ষু। তিনি আন্দোলনকে আরও জোরদার করার কথাও বলেন।অন্যদিকে– আলোচনায় অংশ নিয়ে মানবাধিকার কর্মী অধ্যাপক সুজাত ভদ্র অভিযোগ করেন– বিজেপি কোনওদিনই সত্য কথা বলেনি। সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলেছে। তিনি কেন্দ্রের শাসকদলকে ভ্রষ্টাচারী বলে আক্রমণ করে বলেন– দেশের সংস্কৃতির পরিপন্থী কাজ করছে বিজেপি। এনআরসি ও সিএএ নিয়ে আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন– দেশের মানুষের মধ্যে যে গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদের আন্ডার কারেন্ট আছে– তা প্রমাণিত হয়েছে। দেশভাগ নিয়ে নেহরু ও জিন্নাহকে বিজেপির আক্রমণ নিয়েও তিনি সরব হন। এ দিন সুজাত ভদ্র বলেন– বিজেপি একসময় নেহরু তো অন্য সময় গান্ধিজিকে ছোট করছে। আর বল্লভভাই প্যাটেলকে বড় করে দেখাচ্ছে– কিন্তু ইতিহাস বলেছে– ‘দেশভাগে সবচেয়ে খুশি হয়েছি বলে দাবি করেছিলেন প্যাটেল’। সরকারের নানান পদক্ষেপে দেশের আর্থিক অবস্থা ও প্রতিবেশী রাষ্টের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা তৈরি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক দীপঙ্কর দে। একই সুরে মাওলানা আবদুর রফিক বৈষম্যমূলক আইন প্রত্যাহার করতে হবে বলে দাবি জানান। তাঁর আরও দাবি– নাগরিকত্ব যদি দিতেই হয় তবে সকল সম্প্রদায়ের জন্যেই উন্মুক্ত করা হোক। নির্যাতিতদের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে ভাগ করে সাংবিধানিক সমতাকে কেন বাদ দেওয়া হচ্ছে? প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
অন্যদিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এদিন কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন, নতুন নাগরিকত্ব আইন হিন্দুদের সুবিধা দেবে না। মাত্র ৩১ হাজার মানুষ সুবিধা পাবেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের দিকে নজর দিন সরকার। এমন দাবিও তোলেন। 

Post a Comment

0 Comments