পোষ্য কুকুর যখন শেষ সময়েরও বন্ধু!

মনিরা মন্ডল

দেশে যখন 'মানুষ' বন্ধুর আকাল পড়েছে তখন বারবার প্রমান হয় কুকুরই মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্থ বন্ধু। কথায় বলে, কুকুর পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী যে কিনা নিজের চাইতেও তার মনিবকে বেশি ভালোবাসে। আবারও তাই প্রমাণ হলো কলকাতার মহেশতলা থানার নুঙ্গির মোল্লাপাড়ায়। প্রতিবেশীদের কাছে জানা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে পাড়ায় অস্থিরভাবে ছুটে বেড়াচ্ছিল এলাকারই এক বাড়ির পোষ্য কুকুর। সাধারণ ভাবে ডাকার থেকে এদিন একটু আলাদাই ছিল তার সেই বিপদের ডাক। কুকুরটি চিৎকার করতে করতে বারবার বাড়ি থেকে বাইরে ছুটে বেড়াচ্ছিল। কুকুরটির এমন অস্বাভাবিক আচরণ দেখে এলাকার লোকের সন্দেহ হয়, পরক্ষনেই তারা ছুটে তাই ওই বাড়িতে। গিয়ে দেখেন ভিতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কোনো সাড়া না মেলায় জানালা দিয়ে উকি মেরে দেখতে পান ঘরে ঝুলছে এক দম্পতির দেহ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় মৃত স্বামীর নাম সন্তোষ দেব, (44) ও স্ত্রী রুপালি দেব(39)। প্রতিবেশীরা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
ছবি সৌজন্যে: মাদারীপুর দর্পণ

মঙ্গলবার এই মর্মস্পর্শী এই ঘটনাটি ঘটেছে মহেশতলা থানায় নুঙ্গির মোল্লাপাড়ায়। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ওই দম্পতির কোনো সন্তান ছিলোনা, নিঃসন্তান ওই দম্পতির কুকুরটিই ছিল একমাত্র ভরসা। মৃত সন্তোষ দেব এর ভাই জানায় দাদা সেইরকম কিছু করতো না ফলে অনেকের কাছে টাকা ধার নিয়েছিলেন , কিন্তু পরিশোধ করতে পারছিলেন না এই কারণে বেশ কিছুদিন অবসাদে ভুগছিলেন।আর সেই কারণেই হয়তো তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। প্রতিবেশীরাও জানান বেশ কিছু ব্যাংক ও কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাছ থেকেও বেশি অনেকটা টাকা ধার নিয়েছিলেন ওই দম্পতি। এই ঘটনার কথা পুলিশ কে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ একটি সুসাইড নোট উদ্ধার করে । আর সেই সুসাইড নোটে মৃত রুপালি দেব লিখেছেন অনেক জায়গায় টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল , পাওনাদাররা সেই পাওনা টাকার জন্য বারবার তাগাদা করছিলেন। পুলিশের অনুমান ঋণের টাকা পরিশোধ করার মতো অবস্থা না থাকার কারণে তারা আত্মহত্যা করেছে।

Post a Comment

0 Comments